সারা দেশের মতো বরগুনায়ও অনির্দিষ্টকালের নৌ ধর্মঘট চলছে। নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকে ধর্মঘটে রোববার (২৭ নভেম্বর) মধ্যরাত থেক সারা দেশে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকাগামী যাত্রীরা।

জানা যায়, ১০ দফা দাবিতে রোববার রাত ১২টা থেকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ ধর্মঘটের ডাক দেয়। এতে বরগুনা নদীবন্দর থেকে সব ধরনের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ এ ধর্মঘটের কারণে গতকাল থেকে কোনো লঞ্চ বরগুনা নদীবন্দর টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি। আজও কোনো লঞ্চ ছেড়ে যাবে না বলে জানা গেছে।

এদিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন চিকিৎসাসহ জরুরি কাজে যাওয়া ঢাকাগামী যাত্রীরা। নিম্ন আয়ের যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে বাসে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। 

বরগুনার মনসাতলী এলাকার মজিবুর রহমান বলেন, গাছ থেকে পড়ে আমার নাতির পা ভেঙে গিয়েছিল। মাসখানেক ঢাকায় চিকিৎসা করে বাড়িতে আসি। কিন্তু হঠাৎ ওর পা ফুলে ওঠে, ব্যথা হয়। তাই ঢাকা যাওয়ার জন্য লঞ্চঘাটে এসে দেখি, লঞ্চ চলছে না। গতকালও নাকি কোনো লঞ্চ ছাড়েনি। পাভাঙা রোগী নিয়ে তো আর বাসে যাওয়া সম্ভব না। আবার অ্যাম্বুলেন্স খরচও অনেক।

শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি পেশায় অ্যাডভোকেট। ১ তারিখ থেকে আমার কোর্ট ছুটি। তাই পরিবার নিয়ে ঢাকায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যেতে চেয়েছি। এ কারণে আগেই কেবিন বুকিং দিতে এসেছি। এসে দেখি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। 

ইউসুফ আলী নামে একজন বলেন, আমি ঢাকায় একটি হোটেলে কাজ করি। ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিলাম। আজ ঢাকা যাওয়ার কথা, কিন্তু এসে দেখি কোনো লঞ্চ ছাড়ছে না। আমার তো ঢাকা যেতেই হবে। বাসে ভাড়া অনেক। ভাড়া ও ঢাকায় গিয়ে খাওয়া বাবদ কিছু টাকা আছে। এখন বাসে গেলে আমার দুদিন না খেয়ে থাকতে হবে।

ঢাকা নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক মহসিন মিয়া মুঠোফোনে বলেন, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে একাধিকবার ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। কিন্তু বারবারই আমরা আশ্বাস পেয়েছি, কোনো দাবি-দাওয়া মানেনি মালিক পক্ষ। তাই আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের এই ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।

খান নাঈম/এসপি