মাদারীপুরের রাজৈরে বৌভাতের দাওয়াত খেয়ে শিশুসহ অন্তত ১০০ জন অসুস্থ হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে ৪০ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা বিভিন্ন ক্লিনিক ও বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অসুস্থ ব্যক্তিদের সবার বাড়ি রাজৈর উপজেলার গঙ্গাবর্দী ও সুতারকান্দি গ্রামে।

ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার গঙ্গাবর্দী গ্রামের আনোয়ার খালাসীর ছেলে সরোয়ার খালাসী একই উপজেলার পাখুল্যা গ্রামে বিয়ে করেন। বৌভাতের অনুষ্ঠানে বর সরোয়ার খালাসী এলাকার তিন শতাধিক বাড়িতে দাওয়াত দেন। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) খাবার খাওয়ার পর অতিথিরা সবাই বাড়ি ফিরে যান। এরপর শুক্রবার বিকেল থেকে রোববার (২৭ নভেম্বর) রাত পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নারী-পুরুষ ও শিশু পেটের পীড়া, বমি ও পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ৪০ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, পেটব্যথা নিয়ে ৪০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কেউ কেউ চিকিৎসা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ২২ জন নারী ও শিশু এবং ১৮ জন পুরুষ রয়েছেন।

বরের বড় ভাই সোবহান খালাসী বলেন, দু-একজনের সমস্যা হলে বিষয়টি স্বাভাবিক ছিল। যখন শুনলাম প্রায় সবারই এ সমস্যা হয়েছে, তখন বিষয়টি স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। মেয়েপক্ষেরও ৫-৬ জন অসুস্থ হয়েছে বলে শুনেছি।

সিরাজুল ইসলাম (৬৫) নামের এক রোগী বলেন, দাওয়াত খেয়ে আসার পর থেকে পেটব্যথা শুরু হয়। রাত ১১টার দিকে বাড়িতে ১৫-২০ জনের পাতলা পায়খানা ও বমি হতে থাকে। অবস্থা বেশি খারাপ হলে রাতেই এসে হাসপাতালে ভর্তি হই। পরে জানতে পারলাম ওই অনুষ্ঠানে যারা এসেছিল প্রায় সবারই একই অবস্থা।

দাওয়াত খেতে আসা ঝুমুর বেগম বলেন, দাওয়াত খেয়ে বাড়ি পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই পেটে ব্যথা ও পায়খানা শুরু হয়। ডাক্তার বলছে ফুড পয়জনিং হয়েছে।

এ ব্যাপারে আনোয়ার খালাসী বলেন, আমরা সুন্দরভাবেই রান্না করেছি। জানি না তাদের কেন এরকম হলো। আরও কত লোক খেয়েছে। তাদের তো এরকম হলো না। আমাদের খাবারে কোনোরকম ঝামেলা ছিল না। আমরা মানুষকে দাওয়াত দিয়েছি আপ্যায়ন করার জন্য।

রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে এমনটা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা চলছে।

রাকিব হাসান/এমজেইউ