নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বিজবাগ নবকৃষ্ণ উচ্চবিদ্যালয়ের ৪৩ শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশিত না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে ১০ শিক্ষককে সাত ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটে। পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আশ্বাসে তালা খুলে দেওয়া হয়।

জানা যায়, বিজবাগ নবকৃঞ্চ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর ভোকেশনাল (ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাসাইনমেন্ট) বিভাগ থেকে ৪৩ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কিন্তু সোমবার এসএসসি ফল প্রকাশিত হলে ভোকেশনাল বিভাগের ওই ৪৩ জন শিক্ষার্থী সকলে ফেল করে। এতে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষককে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কক্ষে রেখে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। খবর পেয়ে সেনবাগ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের উদ্ধার করে।

বিজবাগ নবকৃষ্ণ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলাকালে বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার নবম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া ৪৩ জন শিক্ষার্থী ১৪ বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্টের খাতা জমা দিয়েছিল। কিন্তু বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা বোর্ডে ১৩ বিষয়ের নম্বর পাঠানো হয়েছে। এ কারণে বোর্ড থেকে একই বিদ্যালয়ের এসএসসি সাধারণ শাখার শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হলেও ভোকেশনাল শাখার ৪৩ শিক্ষার্থীর ফলাফল স্থগিত রাখা হয়।

ইকবাল হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ ফলাফল নিয়ে জটিলতার বিষয়টি আগেই জানতাম। প্রধান শিক্ষকের ভুলের কারণেই ফলাফল স্থগিত রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে আমরা শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ ৪৩ শিক্ষার্থী ফেল করার কথা ঢাকা পোস্টকে স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, নবম শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার কাগজপত্র করোনার কারণে সময় মতো না পৌঁছানোয় ওই বিষয়ের ফল প্রকাশিত হয়নি। ফলে তারা ফেল করেছে। আগামী দুই মাস পর নবম শ্রেণির ফল প্রকাশিত হলে ওই সময় এসএসসি পূর্ণ ফল প্রকাশিত হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুন নাহার ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করার বিষয়টি জানার পর পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি কয়েক দিন আগেই প্রধান শিক্ষক জেনেছেন। শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বলা হয়েছে, তবু শিক্ষার্থীরা অন্যদের ফলাফল প্রকাশিত হতে দেখে মন খারাপ করে বিদ্যালয়ে তালা দিয়েছে। 

নাজমুন নাহার আরও বলেন, ফলাফল জটিলতা নিয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলেছি। দুই মাসের মধ্যে স্থগিত ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে ভর্তি হতে কোনো সমস্যা হবে না।

হাসিব আল আমিন/এমএ