আরও ৪৫ ইয়াবা কারবারির আত্মসমর্পণ
আদালত প্রাঙ্গণ
কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে আত্মসমপর্ণ করেছেন পলাতক থাকা আরও ৩৬ ইয়াবা কারবারি। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) তারা আত্মসমপর্ণ করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল।
এর আগে সোমবার আরও ৯ জন আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তাদেরও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এ নিয়ে মোট ৪৫ ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার দায়রা ও জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, কারাগারে পাঠানো আসামিরা দ্রুত খালাস পাবেন। এসব আসামিদের হাজতবাস সাজার অধীনে হওয়ায় নতুন করে সাজাভোগ করতে হচ্ছে না। এখানে প্রতি আসামি দুই বছরের কাছাকাছি হাজতবাস করেছেন। তবে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে করা ২০ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ করলেই এদের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।
সোমবার আত্মসমর্পণ করে কারাগারে আসা ৯ ইয়াবা কারবারিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মো. শাহ আলম। এদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য বদির চার ভাইসহ অন্যান্য স্বজনরাও রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
জেলা কারাগারের সুপার মো. শাহ আলম বলেন, এ নিয়ে ১০১ জনের মধ্যে ২৬ জন কারামুক্ত হয়েছেন। এর আগে কারাগারে থাকা ১৭ আসামিকে রোববার ও সোমবার পৃথকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। আদালত থেকে খালাস দেওয়ার আদেশ পাওয়ার পর পর্যায়ক্রমে তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে এ মামলার আসামি মোহাম্মদ হোছাইন অন্য একটি হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পন করা ৩৬ জনকে সন্ধ্যার পর কারাগারে আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ সৈকতের নিকটবর্তী এলাকায় ইয়াবা ও অস্ত্রসহ একদল ইয়াবা কারবারি অবস্থান নেওয়ার খবরে পুলিশ অভিযান চালায়। ওই সময় পুলিশের কাছে ১০২ জন আত্মসমর্পণের ইচ্ছা জানান। ওই দিনই টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে ১০২ জন আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি সাড়ে তিন লাখ ইয়াবা, ৩০টি দেশীয় বন্দুক ও ৭০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিনই আত্মসমর্পণকারী ১০২ জনকে আসামি করে টেকনাফ মডেল থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করা হয়।
মামলাটি করেন টেকনাফ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয় পরিদর্শক এবিএমএস দোহাকে। মামলার দিনই আদালতের মাধ্যমে সব আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
১০২ জন আসামির মধ্যে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলার সময় ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট মোহাম্মদ রাসেল নামে এক আসামি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্ন ফারাহের আদালত ১০১ আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। একই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সব আসামির উপস্থিতিতে শুনানি শেষে মামলার চার্জ গঠন করেন।
গত ২৩ নভেম্বর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল টেকনাফে প্রথম দফায় আত্মসমর্পণকারী ১০১ জন ইয়াবা কারবারিকে ১ বছর ৬ মাস করে কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই সঙ্গে অস্ত্র মামলায় সবাইকে খালাসের আদেশ দেয় আদালত।
সাইদুল ফরহাদ কক্সবাজার/আরকে