সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন, মহাসড়কে অবৈধযান বন্ধ ও জ্বালানি তেল এবং যন্ত্রাংশের অস্বাভাবিক মূল্য হ্রাসসহ ১০ দফা দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়। এসময় আন্তঃজেলা বা দূরপাল্লার কোনো যানবাহন এই জেলা থেকে ছেড়ে যায়নি বা প্রবেশ করেনি। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

এর আগে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস সব ছেড়ে গেলেও যাত্রীদের নিয়ে আর ফেরেনি। এছাড়া গতকাল বিকেলে থেকেই আন্তঃজেলা চলাচলকারী পরিবহনগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। বাস বন্ধ থাকায় বেশি ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে সিএনজি চালিত অটোরিকশাগুলো। তবে অটোরিকশা চালকরা বলছেন, ধর্মঘটে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী আসছে না।

তরিকুল ইসলাম নামের এক যাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে জানতাম আজ থেকে পরিবহন ধর্মঘট। কিন্তু তারপরেও চাকরির সুবাদে ছুটি শেষে কর্মস্থল নাটোরে ফিরতে হবে। তাই বাস না পেয়ে অটোরিকশা করেই যেতে হবে। কষ্ট হলেও উপায় নেই। খুব সকালেও খোঁজ-খবর নিয়েছি, ধর্মঘট এড়িয়ে চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি। 
 
আহমেদ আলী নামের এক যাত্রী জানান, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সড়ক জুড়ে অটোরিকশা ও সিএনজি চালকদের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য শুরু হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীর নিয়মিত ভাড়া যেখানে ১০০ টাকা, সেখানে এখন নেওয়া হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা। যেহেতু কোনো উপায় নেই, তাই অধিক ভাড়া দিয়েই বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে সবাইকে।  

কলেজছাত্র সুবাস চৌধুরী বলেন, জেলা শহর থেকে আমনুরা বাজার সাধারণত বাসে করেই যায়। তবে মাঝেমধ্যে অটোরিকশাতে যাই। আমি জানি অটোরিকশার নিয়মিত ভাড়া ৩০ টাকা। এখন চাচ্ছে ৫০ টাকা। যেহেতু হাতে কোনো অপশন নেই, তাই বাধ্য হয়েই যেতে হবে। 

তবে ভাড়া বৃদ্ধির অভিযোগ অস্বীকার করছেন সিএনজি ও অটোরিকশা চালকরা। চালক মহাব্বত আলী জানান, নিয়মিত ভাড়ার থেকে ১০-২০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। যেমন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীর ভাড়া সিএনজিতে ১৩০ টাকা ও অটোরিকশায় ১০০ টাকা। আগেও এই ভাড়া ছিল, আজকেও তাই আছে। তবে দু-একজন চালক ১০-২০ টাকা বেশি নিচ্ছে। 

ধর্মঘট প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. হামিদুর রহমান নান্নু ঢাকা পোস্টকে বলেন, দাবি আদায়ে সরকারের সাথে বারবার আলোচনা হলেও কোনো সমাধান না আসায় বাধ্য হয়ে এই ধর্মঘটের ডাক দিতে হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আন্তঃজেলা ও দেশের বিভিন্ন রুটে গড়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক বেশি বাস চলাচল করে থাকে। 

জাহাঙ্গীর আলম/আরকে