মো. মস্তফা (৭৫)। ভ্যান মেকানিক। বয়স বেশি হওয়ায় ভারী কাজ করতে পারেন না। এছাড়া গত পাঁচ বছর যাবৎ কানেও তেমন শুনতে পান না। তবুও একদিন বিশ্রামের সুযোগ নেই তার। কেননা তার দৈনিক ১০০ থেকে ২০০ টাকা আয়ের ওপর ভর করেই যে চলে পাঁচজনের সংসার। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মস্তফা।

জানা যায়, মো. মস্তফা ছোটবেলা থেকে বাবা নুর মোহাম্মাদের সঙ্গে বরিশালের কাউয়ার চর নামক স্থানে খেয়া পারাপার করে সংসার চালাতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর খেয়া পারাপার করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় মস্তফাকে। তাই কাজের খোঁজে লতাচাপলী এসে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান মস্তফা। তার বড় ছেলে লিটন মাহিন্দ্রাচালক। ছোট ছেলে রিপন থাকেন অন্যের ট্রলারে। তাদের দুজনেরই আলাদা সংসার। স্বামীর সঙ্গে মেয়ে রুমার ছাড়াছাড়ি হয় ১২ বছর আগে। এরপর থেকে দুই সন্তান নিয়ে বাবার পরিবারেই আছের রুমা। তাই স্ত্রী, মেয়ে ও তার দুই সন্তানসহ ৫ সদস্যের পরিবার মস্তফার।

মস্তফা বলেন, সংসারের ঘানি টানতে টানতে আমি ক্লান্ত। কিন্তু কিছুই করার নেই। ৫টি মানুষের খাবার আমাকে প্রতিদিন জোগাড় করতে হয়। এখন আর আগের মতো ভ্যান চালাতে পারি না। তাই স্থানীয় আলীপুর বাজারে মেকানিকের কাজ করি। কিন্তু বাড়ি বাজার থেকে বেশ দূরে হওয়ায় দুপুরে খেতে হয় হোটেলে। প্রতিদিন ১০ টাকার ভাত আর ২০ টাকার সবজি বা ডিম। অবশিষ্ট যা থাকে তা দিয়েই কোনোরকমে চলে সংসার।

তিনি আরও বলেন, বয়স এখন ৭৫। শরীর আর কুলোয় না। কিন্তু তবুও ভিক্ষা করি না। এছাড়া আগের এখন আর মতো ভ্যান নেই। এখন সব মোটর দিয়ে চলে। কিন্তু আমি মোটরের কাজ জানি না, তাই বেশি আয়ও করতে পারি না।

লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, মো. মস্তফাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতাসহ সাধ্যমতো সহযোগিতা করে আসছি।

এমজেইউ