লক্ষ্মীপুরে বাড়ির চলাচলের রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ও খাল খনন করে দুই পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শহরকসবা গ্রামের বজলুর রহমান হাজী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

গত আট দিন ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে সৌদিপ্রবাসী সাহাব উদ্দিন ও স্যানিটারি ব্যবসায়ী মোসলেহ উদ্দিনের পরিবার। একই এলাকার প্রভাবশালী দিদার হোসেন ও তার বোন পান্না আক্তারের বিরুদ্ধে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সাহাব উদ্দিনের পরিবার রাস্তাটি ব্যবহার করেছে। হঠাৎ করে দিদার লোকজন দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ওই রাস্তাটি বন্ধ করে দেন। সাহাব উদ্দিন ও মোহলেহ উদ্দিনের পরিবার এখন অসহায় হয়ে পড়েছে। দিদারদের কাছ থেকে রাস্তার জমিটি কেনার জন্য প্রস্তাব দেন সাহাব উদ্দিনরা। কিন্তু ওই রাস্তার মুখেই পুকুরে কাটছে তারা।

সৌদিপ্রবাসী সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান, তারা প্রায় ১২ বছর আগে জমি কিনে বসতঘর করে বসবাস করে আসছেন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য সেখানে ৫ ফুট প্রশস্ত একটি রাস্তাও ছিল। সেখানে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগের একটি খুঁটিও রয়েছে। কিন্তু গত আট দিন আগে জমির মালিক দিদার ও তার বোন পান্না সড়কটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেন। এর মধ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়ার মুখেই চারটি খুঁটি স্থাপন করা হয়। বৃহস্পাতবার (১ ডিসেম্বর) ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করা হয়েছে। রাস্তাটি পরিত্যক্ত বুঝানোর জন্য প্রায় ২০টি সুপারি গাছের চারাও রোপণ করে দেন তারা। এখন তিনি চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন। অন্যের ধান ক্ষেতের পাড় দিয়ে এখন চলাচল করতে হচ্ছে। বর্ষা এলে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাবে না।

ভুক্তভোগী স্যানিটারি ব্যবসায়ী মোসলেহ উদ্দিন বলেন, সাত বছর আগে সাহাব উদ্দিনের ঘরের পাশেই আমি জমি কিনি। সেখানে বসতঘর তৈরি করছি। ঠিক সেই মুহূর্তে দিদার লোকজন দিয়ে রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে ভাড়াটে লোকজন এনে ভেকু মেশিন দিয়ে রাস্তায় পুকুর কেটে দেয়। এখন আমাদের চলাচলের রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

ঘটনাস্থল গিয়ে জমির মালিক পান্না আক্তার ও তার বোন রৌশন আক্তারকে দেখা যায়। পান্না আক্তার জানিয়েছেন, তারা বাড়ি করার উদ্দেশ্যে প্রায় ১০ বছর আগে জমিটি স্থানীয় নুর হোসেনের কাছ থেকে ক্রয় করেন। এখন তারা (দিদার ও পান্না) সেখানে বসতঘর নির্মাণ করবেন। সেখানে রাস্তা ছিল না। জমি খালি পড়ে থাকায় তারা এমনিতেই সেখান দিয়ে হাঁটাচলা করতো। বসতঘর নির্মাণ করলে পুকুর অপরিহার্য, সে উদ্দেশ্যেই পুকুর কাটা হয়েছে। এজন্য তারা তাদের জমির নিরাপত্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছেন। কারো বাড়ির পথ বন্ধ করেননি। 

তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাঈন ভুলু বলেন, বাড়ির রাস্তা বন্ধ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আগামী বুধবার (৭ ডিসেম্বর) উভয়পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/আরএআর