পাম্প থেকেই ধার নেওয়া হচ্ছে হেলমেট

দুর্ঘটনা থেকে মোটরসাইকেল চালকদের রক্ষা করতে হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে নীলফামারী পুলিশ। জেলায় ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। তবে এ কর্মসূচি চালুর এক সপ্তাহের মধ্যে পুলিশের দেওয়া ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ নির্দেশনা মানছেন না ফিলিং স্টেশন মালিকরা। পাম্প থেকে হেলমেট ধার করে পেট্রোল কিনছেন মোটরসাইকেল চালকরা।

জানা গেছে, গত ২৭ নভেম্বর পেট্রোল পাম্প মালিকদের সঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বৈঠক করে সকলের সম্মতিতে  ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ কর্মসূচি চালুর সিদ্ধান্ত নেন। পরে ১ ডিসেম্বর থেকে নীলফামারীর পেট্রোল পাম্পগুলোতে চালু হয় এ নিয়ম। তবে সপ্তাহ না যেতেই পেট্রোল পাম্প মালিকরা মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট ছাড়াই দিচ্ছেন জ্বালানী। অনেকে ফিলিং স্টেশনের হেলমেট ধার নিয়ে মোটরসাইকেলে পেট্রোল ভরছেন। কেউবা আবার ড্রামে করে ফিলিং স্টেশন থেকে নিয়ে যাচ্ছেন জ্বালানি।

এদিকে পুলিশ বলছে, নির্দেশনা মানছে পাম্প মালিকরা, অব্যাহত আছে অভিযান। অন্যদিকে সরেজমিনে, মুদি দোকানে বোতলেই মিলছে জ্বালানি তেল। যেখানে নেই পরিমাপের কোন বালাই, নেই তদারকি।

জেলার একাধিক ফিলিং স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, হেলমেট ছাড়া অনেকেই মোটরসাইকেলে তেল নিতে এসেছেন ফিলিং স্টেশনে। পাম্পেই হেলমেট রেখে অভিনব কৌশলে তেল বিক্রি করতে দেখা গেছে ফিলিং স্টেশনগুলোতে। এছাড়াও ড্রামে করে বোতলে বিক্রির জন্য পাম্প থেকে জ্বালানি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার মুদি দোকানিরা।

জেলা শহরের পাঁচ মাথা বাইপাস এলাকার ভাই ভাই ফিলিং স্টেশনে হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেলে তেল নিতে এসেছেন সদর উপজেলার রামগঞ্জ এলাকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, রংপুর থেকে আসলাম আমাকে বাড়ির লোক মোটরসাইকেলে নিতে এসেছে। যে বাড়ি থেকে নিতে এসেছে সে ভুলে হেলমেট নিয়ে আসেনি, এজন্য হেলমেট নাই। তবে পাম্পের হেলমেট মাথায় দিয়ে তেল নিলাম। বিপদ তো বলে কয়ে আসে না। এজন্য মাঝে মধ্যে ছাড় দেওয়া উচিত।

আলু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার বাড়ি কিশোরগঞ্জ, সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় হেলমেট আনতে ভুলে গেছি। তবে পাম্পের মধ্যে হেলমেট ধার পাওয়ায় অসুবিধা হয়নি। কিন্ত হেলমেটটা নিজের জন্য ব্যবহার করা দরকার আর এমন ভুল হবে না।

ভাই ভাই ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বলেন, হেলমেট ধার করে তেল দেওয়া-নেওয়া কোনো বিষয় না। সিসিটিভির ভেতরে হেলমেট পড়ে তেল নিলেই হলো। 

নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউপ বলেন, পাম্প মালিকরা তো নির্দেশনা মানছেন। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। পাম্পে হেলমেট রেখে তেল বিক্রি করার বিষয়টি আপনার কাছে শুনলাম, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি।

নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। পাম্প মালিকদের সঙ্গে মিটিংয়ে তারা আমাদের কথা দিয়েছে নির্দেশনা মানবেন। বিভিন্ন দোকানে জ্বালানি তেল বিক্রির বিষয়টি দেখা হবে। পুরো জেলাজুড়ে হেলমেট বিহীন মোটরসাইকেল ধরার অভিযান কঠোরভাবে চলছে। এক মাসে হাজারের ওপরে হেলমেট ও কাগজপত্রবিহীন মোটরসাকেলে মামলা হয়েছে।

শরিফুল ইসলাম/আরকে