৪ হাজার মানুষকে দাওয়াত করে খাওয়ালেন ভারশোঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান

নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের হোসেনপুর মাদরাসা মাঠের এক পাশে জ্বলছে ছয়টি চুলা। সেখানে বড় বড় হাঁড়িতে চলছে রান্না। ১৪ মণ চালের ভাত ও ১৪ মণ আলু দিয়ে আলু ঘাটি তরকারি রান্নার আয়োজন চলছে। 

আয়াজকদের হিসাব অনুযায়ী, ‘বিশাল মাঠজুড়ে করা প্যান্ডেলে এক সঙ্গে দুই হাজার মানুষের খেতে পারবেন। সাড়ে তিন থেকে চার হাজার মানুষকে খাওয়ানো হবে।’
  
মাঠের আরেক পাশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওয়তায় উপকারভোগী বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের মোবাইলে সরকারি ভাতা পৌঁছে দেওয়ার জন্য টেবিল-চেয়ার পেতে বসে থাকা কয়েকজন যুবক সুবিধাভোগীদের ব্যবহৃত সিমে মোবাইল ব্যাংকিং নগদ হিসাব খুলে দিচ্ছেন। 

মাঠের অপর পাশে করা স্টেজ থেকে মাইকের মাধ্যমে ভারশোঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তাকে আসন্ন নির্বাচনে আবারও নির্বাচিত করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন তার কর্মী-সমর্থকেরা। 

স্টেজে ব্যানারে লেখা রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। আয়োজনে মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, চেয়ারম্যান ভারশোঁ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)।

সোমবার দুপুরে ভারশোঁ ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা প্রায় চার মানুষ সমেবত হয়েছিলেন হোসেনপুর মাদরাসা মাঠে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওয়তায় সরকারি ভাতাভোগী মানুষদের মোবাইলে নগদ হিসাব খুলে দেওয়া ও ভাতার টাকা বিতরণে তাদেরকে সেখানে ডেকে নেন চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান। 

সেখানে এসেছিলেন ভারশোঁ ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, হামি কোনো সরকারি ভাতা পাই না। চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে মেম্বার শামীম (৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য) দুপুরে খাওয়ার দাওয়াত দিছে। খাওয়ার উদ্দেশ্যেই আছি। 

কি উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত নির্বাচনে রাজনীতিতে অনেকটা নতুন হওয়া সত্ত্বেও এলাকার মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করেছিলেন। এই মেয়াদে আমার চেয়ারম্যান পদের পাঁচ বছর শেষ হতে চলেছে। ভাতাভোগীদের নগদ হিসাব খুলে দেওয়া ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে শেষ বেলায় আমার প্রতি এলাকার মানুষের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে মানুষকে একবেলা খাওয়ানোর আয়োজন করেছি। বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ছাড়াও ১০ টাকা কেজি দরে চাল, ভিজিডি ও মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীদেরও এই অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, গত রোববার ঠাকুরমান্দা বাজারে ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৪ হাজার মানুষকে দাওয়াত করে খাইয়েছি। আগামীকাল মঙ্গলবার ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষকে খাওয়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
 
মুজিব বর্ষের আলোচনা ও ভাতাভোগীদের নগদ হিসাব খুলে দেওয়ার নামে ভোজের এই আয়োজনকে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে ভোট পাওয়ার জন্য ‘নির্বাচনী ভোজ’ বলে মনে করছেন এলাকার অনেকেই। 

 

শামীনূর রহমান/এমএএস