মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় গাঁজা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে দুই কলেজছাত্রকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। আহত দুই কলেজছাত্রের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনালের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার আন্ধারমানিক এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হরিরামপুর থানার অভিযুক্ত দুই কনস্টেবল আবদুল লতিফ ও আবদুল জব্বারকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আহত দুই কলেজছাত্র হলেন- উপজেলার দড়িকান্দি গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ ও উপজেলার পিয়াজচর এলাকার প্রতিবন্ধী নৈমদ্দিনের ছেলে মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী নিজাম উদ্দিন।

জানা গেছে, হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলামের ব্যক্তিগত সহকারী (বাসার কাজের ছেলে) মাসুদ এবং পুলিশের সোর্স মামুন বিকেলে আন্ধারমানিক এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে যান। সেখানে থাকা দুই কলেজছাত্রকে গাঁজা দিয়ে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করেন। এরপর দুই কলেজছাত্রের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। পরে মাসুদ ও মামুন থানা পুলিশের দুই কনস্টেবল আবদুল লতিফ ও আবদুল জব্বারকে সেখানে ডেকে নেন। এরপর ওই দুই কলেজছাত্রকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ায় চেষ্টা করেন।

এ সময় উপস্থিত লোকজন পুলিশের ওপর চড়াও হলে দুই কলেজছাত্রকে রেখে তারা চলে যান। এরপর আহত অবস্থায় দুই কলেজছাত্রকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কলেজছাত্র নিজামকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর কলেজছাত্র ফয়সালকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) কাজী এ কে এম রাসেল জানান, হরিরামপুর থেকে নিজাম উদ্দিন নামে এক কলেজছাত্র মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ বলেন, থানা পুলিশের সোর্স মামুন ও ওসির ব্যক্তিগত সহকারী (বাসার কাজের ছেলে) মাসুদ দুই কলেজছাত্রকে গাঁজা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। এরপর থানা পুলিশের দুই কনস্টেবলকে ডেকে ওই দুইজন ছাত্রকে বেধড়ক পেটানো হয়। পুলিশের এমন কাজে আমারা সত্যিই হতবাক। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কনস্টেবল আব্দুল লতিফ জানান, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে এ বিষয়ে কোনো নিউজ না করতে অনুরোধ করেন তিনি। আরেক অভিযুক্ত কনস্টেবল আবদুল জব্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে এ ঘটনার পর পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান হরিরামপুর থানায় যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই কনস্টেবলকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সোহেল হোসেন/আরএআর