সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী বন্দরে নাব্য সংকটের কারণে ভিড়তে পারছে না পণ্যবাহী বড় জাহাজ। ফলে কাজ না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন বন্দরের পাঁচ শতাধিক শ্রমিক।

জানা যায়, চট্টগ্রাম, খুলনা ও মোংলাসহ দেশের বিভিন্ন নৌ বন্দর থেকে সার, কয়লা, সিমেন্ট ও তেলসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে প্রতিদিনই জাহাজ এ বন্দরে আসে। তবে শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই নদীতে পানি কমতে থাকায় বড় জাহাজ চলাচল কমতে থাকে। বড় জাহাজ চলাচলে ১০-১৫ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন হলেও এখন পানি আছে ৫-৮ ফুট। তাই দুই সপ্তাহ ধরে বন্দরে ভিড়তে পারছে না বড় জাহাজ।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া বলেন, পানি কমে যাওয়ায় নদীতে অনেক ডুবোচর জেগে উঠেছে। ফলে পূর্ণলোডে পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে আসতে পারছে না। এতে বন্দরের প্রায় ৫ শতাধিক শ্রমিক প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বেকার হয়ে পড়েছে। এ সমস্যা সমাধানে নদী ড্রেজিং করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

নৌবন্দরের শ্রমিক প্রতিনিধি আবুল সরকার বলেন, দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় জাহাজ আটকে যাওয়ায় লাইটারেজ জাহাজ ও কার্গোতে করে বন্দরে পণ্য আনতে হচ্ছে। এতে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ী ও ঘাট ইজারাদারদের। আর বন্দরে বড় জাহাজ ভিড়তে না পারায় বেকার হয়ে পড়ছে শ্রমিকরা। উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার সার, চাল, গমসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসা হয় এই বন্দর দিয়ে। এছাড়া পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নামে তিনটি জ্বালানি তেলের ডিপোও রয়েছে এই বন্দরে।

বাঘাবাড়ী বন্দরের শ্রমিক মিনহাজুল ইসলাম, বেলাল হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত ৪০ বছরেও এ বন্দর জাহাজ শূন্য হয়নি। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে ডুবোচর ও নাব্য সংকটের কারণে জাহাজ আসতে না পারায় প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। ফলে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি আমরা।

বাঘাবাড়ী বন্দরের বাফার গুদামের কর্মকর্তা হারুন আর রশিদ বলেন, উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার ১৪ বাফার গুদামে ইরি-বোরো আবাদের জন্য আপদকালীন সার মজুত রয়েছে। ফলে এ সমস্যায় সার সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, বাঘাবাড়ী দ্বিতীয় শ্রেণির বন্দর। বন্দরটিকে প্রথম শ্রেণিতে রূপান্তরের চেষ্টা চলছে। এটি হলেই এ সমস্যা আর থাকবে না।

শুভ কুমার ঘোষ/এসপি