প্রায় একমাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর মেঘের রাজ্য খ্যাত সাজেকের জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট ‘হেলিপ্যাড’ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। গত ১৫ নভেম্বর কর্তৃপক্ষ সংস্কার কাজের জন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে সাজেক ভ্যালির হেলিপ্যাডে পর্যটক ও জনসাধারণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। 

সাজেকের হেলিপ্যাড বরাবরই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সাজেকে এটিই একমাত্র জায়গা যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই উপভোগ করতে পারেন পর্যটকরা। এই হেলিপ্যাডের চারপাশে রয়েছে অনেকগুলো খাবার দোকান। হেলিপ্যাডে দাঁড়ালে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের পাশাপাশি উপভোগ করার সুযোগ হয় বিশাল পাহাড় আর মেঘের লুকোচুরি। হেলিপ্যাডের পাশেই রয়েছে সাজেক জিরো পয়েন্ট। হেলিপ্যাড খুলে দেওয়াতে বেড়েছে পর্যটক উপস্থিতি এবং এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন দোকানিরা। 

দোকানদার মনির হোসেন বলেন, মাঝখানে কিছুদিন হেলিপ্যাড বন্ধ থাকাতে পর্যটক এদিকে কম আসত। এখন পর্যটকরা এদিকে আসলে দোকানে বসে নাস্তা করে। তাই ব্যবসাও ভালো হচ্ছে।  

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোরের সূর্যোদয় দেখার জন্য হেলিপ্যাডে প্রচুর পর্যটক জড়ো হয়েছেন। অনেকে নিজেদের মতো সময় কাটাচ্ছেন, ছবি তুলছেন। রাঙামাটি থেকে বেড়াতে আসা সংবাদকর্মী শংকর হোড় বলেন, আমরা যখন সাজেক আসার পরিকল্পনা করছিলাম তখন জানতে পেরেছিলাম হেলিপ্যাড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরে জানতে পারলাম সংস্কার কাজ শেষে আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। হেলিপ্যাডে এসে খুব ভালো লাগছে। এখান থেকে প্রকৃতির যে অপার সৌন্দর্য তা খুব ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। 

আরেক পর্যটক সামশুল আরেফিন বলেন, আমরা শুনেছিলাম হেলিপ্যাড বন্ধ আছে। কিন্তু এসে হেলিপ্যাডে খোলা পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। হেলিপ্যাডে সাধারণত সকালের সময়টাতে পর্যটকরা বেশি আসেন সূর্যোদয়টা উপভোগ করার জন্য। এখানে যথেষ্ট পর্যটক আসছেন। আমি আশা করব হেলিপ্যাডটা সবসময় পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। 

খাস্রাং হিল রিসোর্টের ব্যবস্থাপক সুব্রত চাকমা বলেন, আসলে পর্যটকদের কাছে একটা আকর্ষণের জায়গা হলো হেলিপ্যাড। কারণ এখান থেকে সূর্যোদয়টা খুব চমৎকার ভাবে দেখা যায়। হেলিপ্যাড খুলে দেওয়াতে পর্যটকরা খুব খুশি হয়েছেন। 

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, আগে পর্যটকরা প্রায় সময় বাইক, গাড়ি এসব নিয়ে হেলিপ্যাড উঠে যেতেন। এতে করে হেলিপ্যাডের অনেক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাই কর্তৃপক্ষ হেলিপ্যাডের চারপাশে তারের বেড়া নির্মাণ করে এবং কিছু সংস্কার কাজ শেষে আবারও পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে। 

সাজেক আমাদের, তাই সাজেকের প্রাকৃতিক পরিবেশকে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

মিশু মল্লিক/আরকে