সুমাইয়া

কৃষক পরিবারে অল্প আয়ে খুব কষ্টে দিন কাটে প্রতিবন্ধী সুমাইয়ার (১২)। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি থেকে সুমাইয়া একটি হুইল চেয়ার পেলেও বর্তমান সে কোনো ভাতা সুবিধা পাচ্ছে না। 

সুমাইয়া শ্রীবরদী উপজেলার রাণীশিমুল ইউনিয়নের কন্টিপাড়া বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুলের ১ম শ্রেণির ছাত্রী। কৃষক সিরাজ মিয়া ও আনোয়ারার মেয়ে। জন্ম থেকে তার দুই পা ও এক হাত অচল।

এর আগে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির ভবনের সামনে এক আলোচনা সভায় প্রতিবন্ধীদের মাঝে ৩৪টি হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়।

ওই অনুষ্ঠানে হুইল চেয়ার পেয়ে শারিরীক প্রতিবন্ধী সুমাইয়া বলেন, আমি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে হাঁটাচলা করতে পারি না। মায়ের সাহায্যে চলাচল করি। আমি দুই পা ও এক হাত দিয়ে কিছু করতে পারি না। আমার মা খুব কষ্ট করে স্কুলে দিয়ে যাইত, আবার নিয়ে আসত। আজকে আমি হুইল চেয়ার পেলাম এতে আমার কষ্ট একটু হলেও কম হইব। তবে ভাতাটা আবার পাইলে ভালো হইত। 

সুমাইয়ার মা আনোয়ারা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার স্বামী অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে দিন চালায়। আমার মেয়ে আমাদের এলাকার স্থানীয় এক প্রতিবন্ধী স্কুলে পড়ে। আমার মেয়ে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা কিছুদিন পেলেও এখন আর পাই না। আমরা প্রতিবন্ধী মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। ওর প্রতিবন্ধী কার্ডের টাকা যখন পেতাম তখন ভালো চলে যেত। ভাতার টাকাটা যদি আবার পাই আমাদের কষ্ট একটুু কম হত। তবে হুইল চেয়ার পেয়ে উপকার হয়েছে। 

এ বিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুছ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুমাইয়া যদি প্রতিবন্ধী ভাতা না পেয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদের কাছে জমা দিলে প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করব।

তবে কেন তার প্রতিবন্ধী ভাতা বন্ধ হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, আমাদের দুষ্ট লোকের অভাব নেই। আমাদের প্রতিবন্ধীদের কাছ থেকে ভাতার কথা বলে অনেকেই টাকা দাবি করে। আমরা আপনাদের কাছে অনুরোধ করব কেউ যদি ভুল তথ্য দিয়ে টাকা দাবি করে তাহলে আমাদের কাছে ধরিয়ে দিন। আর সত্যিকারের প্রতিবন্ধীদের ভাতার সুবিধা পেতে সাহায্য করুন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকার দলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক এমপি বলেন, আমার দেশে এখন প্রতিবন্ধীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভাতার ব্যবস্থা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। যেন প্রতিবন্ধীরা কারো বোঝা না হয়। সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য এখন স্কুলের ব্যবস্থা করেছেন।  

শেখ সাঈদ আহম্মেদ সাবাব/আরকে