স্বল্পসময়ের মধ্যে পুরো কোরআন শরিফ মুখস্থ করে রেকর্ড গড়লো কুমিল্লার চার মেধাবী ছাত্রী। মাত্র ৭৮ দিনে কোরআন শরিফ মুখস্থ করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে তারা।

গত বুধবার (২১ ডিসেম্বর) তাদের কোরআন শরিফ মুখস্থ শেষ হয়। এর আগে গত ২ অক্টোবর তারা কোরআন শরিফ শেখা শুরু করে।

তারা হলো, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কান্দুঘর গ্রামের ইদন মিয়ার মেয়ে ইসরাত জাহান স্বর্ণা (৯), দেবিদ্বার উপজেলার হেতিমপুর গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে ইফরাত আক্তার (৯), ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কান্দুঘর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে সাদিয়া আক্তার (১১) এবং দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার আবু তাহেরের মেয়ে হালিমা আক্তার (১২)।

সবাই কুমিল্লার দেবিদ্বার জামিয়া ইসলামিয়া দারুল কুরআন মাদরাসার শিক্ষার্থী। ওই মাদরাসার শিক্ষক (হাফেজা) মাকসুদা আক্তারের তত্ত্বাবধানে কোরআন শরিফ শিক্ষা শেষ করে তারা।

শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি জানিয়েছেন দেবিদ্বার জামিয়া ইসলামিয়া দারুল কুরআন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মুফতি আবু বকর আল মাদানী।

তিনি জানান, দেড় বছর আগে এ চার শিক্ষার্থী দেবিদ্বার জামিয়া ইসলামিয়া দারুল কুরআন মাদরাসায় ভর্তি হয়। প্রথমে তারা আরবী অক্ষর শেখা শুরু করেন। তারপর কায়দা (আরবী শিক্ষার প্রথম বই) তারপর আলিফ লাম( আরবী শিক্ষার দ্বিতীয় বই) শেষ করে। পরে কোরআন শরিফ শেখা শুরু করে তারা। মাদরাসার হাফেজা মাকসুদা আক্তারের তত্ত্বাবধানে কোরআন শরিফ শিক্ষা শুরুর মাত্র ৭৮ দিনে পুরো কোরআন শরিফ শেখা শেষ করে কোরআনে হাফেজা হয়। 

তিনি আরও জানান, চার শিক্ষার্থীই অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তবে মেধার দিক থেকে তারা অতুলনীয়। তাই স্বল্প সময়ের মধ্যে কোরআনে হাফেজা হতে পেরেছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রতিষ্ঠান থেকে এই চার শিক্ষার্থীকে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের বিশিষ্ট আলেমগণের উপস্থিতিতে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।

ক্ষুদে হাফেজা হালিমা আক্তারের বাবা আবু তাহের  ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল মেয়েকে কোরআনের হাফেজা বানানোর। মহান আল্লাহু তা’য়ালা আমার সেই আশা পূরণ করেছেন। এই গর্বিত শিক্ষার্থীদের পরিবারের ইচ্ছা তারা যেন বড় হয়ে আলেমা হয়। 

মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষিকা (হাফেজা) মাকসুদা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেয়ে চারটি দরিদ্র পরিবারের হলেও তারা খুব মেধাবী। একবার বুঝিয়ে দেওয়া পড়া আরেকবার বোঝাতে হয়নি। তাই তারা স্বল্প সময়ের মধ্যে কোরআনে হাফেজা হতে পেরেছে। তাদের কোরআন শেখাতে কিছুটা পরিশ্রম হলেও, তেমন কষ্ট হয়নি। ভালো কোনো তত্ত্বাবধান পেলে তারা অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি। 

আরিফ আজগর/এমএএস