ফাইল ছবি

মেঘের রাজ্য খ্যাত রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকের ঢল নেমেছে। রিসোর্ট-কটেজে কক্ষ না পেয়ে রাস্তা, বারান্দা ও গাড়িতে রাত কাটিয়েছেন শত শত পর্যটক। এছাড়া অনেকেই কক্ষ না পেয়ে ফিরে গেছেন।

সাজেক রুইলুই পর্যটনকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, টানা তিন দিন বন্ধ উপলক্ষে প্রায় মাসখানেক আগে থেকেই সাজেকের সবকটি রিসোর্ট-কটেজের শতভাগ বুকিং হয়ে যায়। যারা আগে বুকিং না দিয়ে গতকাল শুক্রবার সাজেকে প্রবেশ করেছেন তারা কোথাও কক্ষ খালি পাননি। কক্ষ খালি না পেয়ে অনেকেই বিকেলে ফেরত চলে যান। যারা রয়ে গিয়েছিলেন তারা সন্ধ্যা অবধি কোথাও রুম না পেয়ে রাস্তায় ঘুরাঘুরি করতে থাকেন। পরবর্তীতে সাজেক রুইলুই পর্যটনকেন্দ্র রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মাইকিং করে পর্যটকদের লুসাই ক্লাব ঘরে যেতে বলা হয়। সেখানে কিছু পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এরপরও যাদের থাকার ব্যবস্থা হয়নি তারা পাশের ত্রিপুরা পল্লীর বাসাবাড়িতে আশ্রয় নেয়।

সাজেক হিলভিউ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ইন্দ্রজিৎ চাকমা বলেন, আমাদের রিসোর্টগুলো অনেক আগে থেকেই আগামী ২৮ তারিখ পর্যন্ত বুকিং আছে। গতকাল অনেক বেশি পর্যটক সাজেকে এসেছেন, যাদের অনেকেরই পূর্বের কোনো বুকিং ছিল না। যাদের বুকিং ছিল না তারা কোথাও রুম পাননি। আমাদের রিসোর্ট মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কিছু পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা করা হলেও অনেককেই বাইরে, গাড়িতে এবং কটেজগুলোর বারান্দায় রাত কাটাতে হয়েছে। বন্ধের দিনগুলোতে সাজেক আসতে হলে অগ্রিম বুকিং দিয়ে সাজেক আসার পরামর্শ দেন তিনি।

সাজেক জিপ সমিতির লাইনম্যান ইয়াসিন আরাফাত বলেন, গতকাল শুক্রবার প্রায় ৩৫০টির মতো গাড়ি সাজেকে প্রবেশ করেছে। যারা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এসেছেন কিন্তু রুম আগে থেকে বুকিং দেননি তারা বিকেলেই নিজের গাড়িতে ফেরত গেছেন। বাকি অনেক পর্যটক রুম না পাওয়ার কারণে বাইরে থাকতে হয়েছে বলে শুনেছি। গতকাল যারা এসেছিলেন তাদের শতকরা ৮৫ জন আজ সকালে চলে গিয়েছেন। আজ শনিবার ২০০টির মতো জিপ সমিতির নিবন্ধনভুক্ত গাড়ি এবং ৫০টির মতো ব্যক্তিগত গাড়ি সাজেক ঢুকেছে। আজ পরিস্থিতি হয়তো গতকালের মতো হবে না।

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি রাহুল চাকমা জন বলেন, টানা তিন দিন ছুটি উপলক্ষে প্রচুর পর্যটক চলে আসাতে গতকাল পর্যটকদের থাকার ক্ষেত্রে অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা মাইকিং করে লুসাই ক্লাব ঘরসহ আশপাশের কিছু বাসাতে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তারপরও কিছু পর্যটককে কটেজগুলোর বারান্দায় থাকতে হয়েছে। আজ তেমন কোনো চাপ দেখা যাচ্ছে না। আগামীকাল থেকে পরিস্থিতি আবারো স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

সাজেকে ১১২টি কটেজে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারের মতো মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রের তথ্যমতে গতকাল প্রায় ৫ হাজারের মতো পর্যটক সাজেক গিয়েছেন।

মিশু মল্লিক/এমজেইউ