বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় বিয়ে করে বৌ বাড়িতে আনলেও বাসর হয়নি ইরান-নার্গিস দম্পতির। বিয়ের দিনে দায়ের করা যুবলীগ নেতার মামলায় আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নববিবাহিতা যুবক।

জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের বাগধা গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল খালেক খানের ছেলে ইরান খান পার্শ্ববর্তী আমবৌলা গ্রামের মোক্তার আলী মৃধার মেয়ে নার্গিস খানমকে বিয়ে করে সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাড়ি নিয়ে আসেন। ওই বিয়ের বরযাত্রী ছিলেন ইরানের বড় বোন জামাতা বরিশাল জেলা উত্তর যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল মোল্লা।

আবুল মোল্লা বাগধা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল খানের সঙ্গে পশ্চিমপাড় বাজারে বসে কথা বলেন। বিষয়টি দেখে এমদাদুলকে মারধর করেন বাগধা ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান তালুকদার। বিষয়টি জানতে পেরে যুবদল নেতা আবুল মোল্লা এমদাদুলকে মারধরের কারণ জানতে চান যুবলীগ নেতা মশিউর রহমানের কাছে।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যুবদল নেতা আবুল মোল্লার শ্বশুর বাড়ি (বিয়ে বাড়ি) গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকেন। এসময় আবুল মোল্লা শ্বশুর বাড়ি থেকে গোপনে পালিয়ে যায়। পুলিশ ওই রাতেই যুবদল ও ছাত্রদলের তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেন।

ওদিকে বাগধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোকলেসুর রহমান বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় নববিবাহিতা ইরান খান এবং তার ভাই মিরান খানকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলার খবর শুনে নববধূ বাড়িতে রেখেই পালিয়ে গেছেন ইরান খান। নববধূ নার্গিস খানম অভিযোগ করে বলেন, বাজারের ঘটনায় আমার স্বামী কিছুতেই জড়িত নন। তিনি তখন বর সেজে আমাকে নিয়ে আসছিলেন। অথচ তাকে আসামি করা হয়েছে। আমাকে বাসর ঘরে রেখে তাকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এমন হয়রানির আমি ন্যায় বিচার চাই।

মামলার বাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোকলেসুর রহমান দাবি করেন, বিএনপি যুবদলের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছি। মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

যুবদল নেতা আবুল মোল্লা জানিয়েছেন, বাজারে ওদের সঙ্গে তেমন কোনো কথা হয়নি। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল খানে সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমার সঙ্গে কেন কথা বলেছে এই প্রশ্ন তুলে এমদাদুলকে মারধর করে। আমি ওদের গিয়ে বলেছি শুধু বিয়ের দিনে মারধর করা উচিত হয়নি। এরপরই বিকেলে শুনি আমাদের নামে মামলা হয়েছে। প্রশাসন নূন্যতম তদন্তও করলো না।

আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম বলেন, মারামারির ঘটনায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এজাহারনামীয় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোনো আসামির বিয়ে হচ্ছে বা হবে সেটি দেখার বিষয় আমাদের না। এই কর্মকর্তা বলেন, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস