ফ্রি ফায়ার গেমস খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে স্কুলছাত্র সিফাত। এ ঘটনায় জড়িত বন্ধুকে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ঢাকার মনিপুরীপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশর গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করা হয়। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।

এর আগে গত সোমবার দুপুরে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকার একটি বাঁশবাগান থেকে সিফাতের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সিফাত বগুড়া শহরের নূরানী মোড় এলাকার শাহ আলমের ছেলে। সে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত বন্ধু অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার পরিচয় গোপন রেখেছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, নিহত সিফাতের থেকে তার এক বন্ধু কৌশলে ফ্রি ফায়ার গেমের আইডি ও পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়। এরপর সিফাত আইডি ও পাসওয়ার্ড বার বার ফেরত চাইলে ওই বন্ধু ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে সিফাত তার কয়েকজন বন্ধুদের নিয়ে ওই বন্ধুকে আইডি ও পাসওয়ার্ড ফেরত দিতে বাধ্য করে। এই ঘটনায় ওই বন্ধুর সঙ্গে সিফাতের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় এবং সে প্রতিশোধ প্রবণ হয়ে ওঠে।

তিনি আরও বলেন, গত ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে সিফাত তার বড় বোনের মোবাইল ফোন মেরামত করার জন্য নিজ বাসা থেকে বের হয়। পথে তার সেই বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয় এবং সেই বন্ধু কৌশলে তার দাদার বাড়ি শিবগঞ্জের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছালে একটি বাঁশবাগানে ফ্রি ফায়ার গেমস খেলার কথা বলে দুজন আড্ডা দেয়। পরে সিফাত বাড়ি যাওয়ার কথা বললে ওই বন্ধুর আগে থেকেই কাছে থাকা চাপাতি দিয়ে পেছন থেকে সিফাতকে আঘাত করে। পরে সে মাটিতে পড়ে গেলে মুখ চেপে ধরে তাকে জবাই করে এবং বাম হাতের কবজির রগ কেটে দেয়। হত্যাকাণ্ড শেষে ওই বন্ধু ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ঢাকায় আত্মগোপনের জন্য পালিয়ে যায়। 

পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সিফাতের বন্ধু অপ্রাপ্তবয়স্ক। এ ঘটনায় আরও তদন্ত চলছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ, মোতাহার হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার তানভীর হাসান, ডিবির ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ ও শিবগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনজুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

আলমগীর হোসেন/আরকে