এক পা দিয়ে লিখে দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সেই রাসেল মৃধাকে শুভেচ্ছা জানাতে মিষ্টি ও শীতবস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে যান নাটোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ। এসময় রাসেলের পারিবারিক খোঁজখবর ও মা-বাবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সিংড়া পৌরসভার শোলাকুড়া মহল্লায় রাসেলের বাড়িতে উপস্থিত হন তিনি। এসময় রাসেলের পরিবারের জন্য শীতবস্ত্র, ৫ কেজি মিষ্টি ও রাসেলকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে নগদ ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং তার পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব জেলা প্রশাসন বহন করবে বলে আশ্বাস দেন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিংড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এমএম সামিরুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল-আমিন সরকার, সমাজসেবা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান, সিংড়া প্রেস ক্লাবের নির্বাহী সদস্য আবু জাফর সিদ্দিকী প্রমুখ।

রাসেল মৃধা শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা থেকে এ বছর দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৩.৮৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। রাসেল সিংড়া উপজেলার শোলাকুড়া মহল্লার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে।

প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার দুটো হাত নেই, একটি পাও নেই। এক পা দিয়ে লিখে এবার দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৩.৮৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন সামনের দিনগুলোতে ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারি। আমার অনেক ইচ্ছা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে একটি চাকরি করবো। আমার মা-বাবার সকল দায়িত্ব নেব। তারা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। আমার ফলাফলের জন্য বাবা-মা ও শিক্ষকদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।

রাসেল আরও বলেন, মাননীয় জেলা প্রশাসক স্যার আমাকে দেখতে আমার বাসায় এসেছেন। আমার পরিবারের জন্য শীতবস্ত্র, খাবার ও আমাকে আর্থিকভাবে সহায়তাও করেছেন। এজন্য ডিসি স্যারের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। আমিও যেন ডিসি স্যারের মতো সৎ ও আদর্শ মানুষ হতে পারি দোয়া করবেন।

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও রাসেলকে কোনো বাধা দমিয়ে রাখতে পারেনি। রাসেল পা দিয়ে লিখে দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। মনের শক্তিতে সে এগিয়ে চলছে। তার পাশে জেলা প্রশাসন রয়েছে। তাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং সে যতদূর পর্যন্ত লেখাপড়া করতে চাই তার পড়ালেখার যাবতীয় দায়িত্ব জেলা প্রশাসন বহন করবে।

এর আগে সিংড়া চলনবিল প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ২০ জন প্রতিবন্ধী শিশুর হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক।

তাপস কুমার/এমজেইউ