গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে দ্বিতীয় দফায় উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ বুধবার (৪ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে। আসনটিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট দেবেন ভোটাররা।

এদিকে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ভোটগ্রহণের জন্য কেন্দ্রগুলোতে ইভিএমসহ প্রয়োজনীয় মালামাল বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ২৪২টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। যা পর্যবেক্ষণের জন্য উচ্চপর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন।

এছাড়া নির্বাচনের দিন যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ করতে মাঠে বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকবেন।

এই নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান রিপন (নৌকা) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী (জাপা) এএইচএম গোলাম শহিদ রঞ্জু (লাঙ্গল)। ভোটের মাঠে প্রচারণায় দেখা যায়নি বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম (কুলা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমানকে (ট্রাক)। এছাড়া গত ২৫ ডিসেম্বর অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ নাহিদুজ্জামান নিশাদ গত ২৫ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির আশঙ্কায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আসনটিতে ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালে প্রথমে গোপন কক্ষে একাধিক ব্যক্তি প্রবেশ করায় ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, ফুলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং সাঘাটা উপজেলার রামনগর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে দফায় দফায় ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে ইসি।

পরে অনিয়মের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ৫১টি ভোটকেন্দ্রের ঘটনা তদন্ত করে গত ২৭ অক্টোবর ইসিকে প্রতিবেদন দেয়। পরে বাকি ৯৪টি ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ছিল কি না, তা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় ইসি। ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় কমিটি ওই প্রতিবেদন জমা দেয়।

তদন্তে ১২৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পাঁচটি কেন্দ্রের পুলিশের পাঁচজন উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তদন্ত শেষে ৬ নভেম্বর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আগামী ৪ জানুয়ারি গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে তারিখ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।

গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। ১৪৫টি কেন্দ্রে এসব ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

রিপন আকন্দ/এমজেইউ