ফরিদপুরে বাবা হারুন অর রশিদকে হত্যার দায়ে ছেলে মিলন চৌধুরীর (৩০) সশ্রম যাবজ্জীন কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও চারমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুরের যুগ্ম জেলা জজ এক নম্বর আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি মিলন চৌধুরী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পুলিশ পাহারায় মিলন চৌধুরীকে জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

মিলন চৌধুরী ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছোট।

গত ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ভোর সাড়ে ৬টার দিকে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে মিলন চৌধুরী তার বাবা কৃষক হারুন অর রশিদের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে মারা যান। এ ঘটনায় মৃতের স্ত্রী হালিমন বেগম (৫৯) বাদী হয়ে ছেলে মিলন চৌধুরীকে একমাত্র আসামি করে ওইদিনই নগরকান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে মিলন গোড়াইল গ্রামের মোকসেদ শেখের মেয়ে রিতুকে বিয়ে করেন। তাদের রাতুল নামে একটি শিশুপুত্র রয়েছে। মিলন চৌধুরী বিয়ের পর থেকে তার নামে জমি লিখে দেওয়ার জন্য বাবার ওপর চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু হারুন জমি লিখে দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে মিলন বাবার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। 

২০২৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ভোর সাড়ে ৬টার দিকে হারুন অর রশিদ গোয়াল ঘরে গিয়ে গরু বের করছিলেন। ওই সময় মিলন চৌধুরী ঘুম থেকে উঠে বাবার সঙ্গে জমি লিখে দেওয়া নিয়ে বচসায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে মিলন একটি লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে বাবা হারুন অর রশিদের মাথা ফেটে গুরুতর জখম হয়। পরে হারুন অর রশিদকে স্থানীয় কুঞ্জনগর বাজারে পল্লী চিকিৎসক পান্নু মিয়ার কাছে নিয়ে গেলে তিনি হারুনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

গত ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরকান্দা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বাবাকে হত্যার জন্য মিলনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলী আমিনুর রহমান রায়ের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এ রায়ের মাধ্যমে দেশে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।

জহির হোসেন/এমএএস