সিরাজগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় ‘গুলিবর্ষণকারী’ সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক আরিফসহ উভয়পক্ষের পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় আরিফের লাইসেন্স করা একনলা বন্দুকটি জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে তাদের আটক করা হয়। এর আগে দুপুরে সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের বাঐতারা গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করে সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) সুমন কুমার দাস বলেন, আরিফসহ পাঁচ জনকে আটক করা হলেও বাকিদের নাম-পরিচয় এখনই জানানো যাচ্ছে না। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। মামলার পর বাকিদের নাম পরিচয় নিশ্চিত করে বলা যাবে।

সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধরা হলেন— বাঐতারা গ্রামের হাফিজুরের ছেলে জাহিদ (১৪), হাজী হরমুজের ছেলে আব্দুল ওহাব (৭৪), মৃত শমসেরের ছেলে বারেক (৪২), নূর মোহাম্মদের ছেলে শাহিন (১৮), ইউসুফের ছেলে ওমর (২৬), কাদেরের ছেলে শফিকুল (১৫), কাবেলের ছেলে হযরত (২৪), জহিরের ছেলে সেলিম (১৬), মৃত আজাহারের ছেলে নূর মোহাম্মদ (৬০), আমিনুলের ছেলে মুন্না (২১), আয়নালের ছেলে শফিকুল (২৫), শহীদুল্লাহর ছেলে শাহাদত (২০), ফজল আলীর ছেলে ইমদাদুল (১৪), আয়নাল আলীর ছেলে ফরিদুল (৫০), ফকিরচাঁনের ছেলে বাপ্পি (২২), ফরিদুলের ছেলে রাফি (১৮), ময়দান আলীর ছেলে আব্দুল বাসেদ (৩৬), আক্তার আলীর ছেলে হযরত আলী (২৮), মালেক মিয়ার ছেলে মিলন (১৮), আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে তোতা মিয়া (১৮), আজিজুলের ছেলে হৃদয় (২৪), কালামের ছেলে রিপন (২৪), রাসেলের স্ত্রী মুক্তি (৩২) ও মৃত শুকুর আলীর ছেলে হাফিজুল (৪০)।

সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফয়সাল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন পর্যন্ত মোট ২৫ জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এখানে ভর্তি হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে, সবাই শঙ্কামুক্ত আছেন।

সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নান্নু খান জানান, দুপুরে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। গুলিবর্ষণকারী যুবককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তার লাইসেন্স করা একনলা বন্দুকটি জব্দ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবার সকালে একটি জমির দলিল উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বাঐতারা গ্রামের দলিল লেখক আলম হোসেনকে একই গ্রামের রুবেল মারধর করে। ওই ঘটনার জের ধরে সোমবার সকাল থেকেই দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় উভয়পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটেকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে রুবেল গ্রুপের পক্ষে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিফ তার লাইসেন্স করা বন্দুক নিয়ে গুলিবর্ষণ শুরু করেন। এতে ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়।

শুভ কুমার ঘোষ/এসএসএইচ/