গেল সপ্তাহ থেকে উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ জেলায় দেখা মেলেনি সূর্যের। এছাড়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরেছে কুয়াশা। এই হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় কাজে যেতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন কেটেছে সাধারণ মানুষদের। তবে দীর্ঘ সময় পর মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সূর্যের দেখা মিলেছে লালমনিরহাটে। তাই কর্মজীবী মানুষরাও আবার কাজে ফিরছেন। কাজে ফিরতে পেরে অনেক খুশি তারা।

মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তুহিন আহমেদ জানিয়েছেন, লালমনিরহাট ও কড়িগ্ৰাম রাজারহাটে আজ ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

তাপমাত্রা বৃদ্ধি হওয়ার কারণে এই লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় সূর্যের দেখা মিলেছে। সূর্যের দেখা পাওয়ায় কর্মে ফিরেছেন সকল মানুষ। যদিও ঠান্ডা হাওয়া এখনো কমেনি। বিশেষ করে ভোগান্তিতে পড়েছেন তিস্তা চর অঞ্চলের মানুষরা। শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে লালমনিরহাটের ১৩টি নদ-নদীর তীরবর্তী ৬৩টি চরের প্রায় ৫০ হাজার মানুষসহ নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীরা। গবাদি পশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের প্রকোপ থেকে।

এছাড়াও ঠাণ্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শীতজনিত নানা রোগ। গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, অ্যাজমা, হৃদরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ভর্তি হচ্ছে ঠান্ডাজনিত রোগীরা। 

তিস্তা অঞ্চলের মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রায় ১০ দিন থেকে বাইরে কাজে যেতে পারিনি। যে কারণে আমি ও আমার পরিবারকে নিয়ে অনেক কষ্টে ছিলাম। প্রচন্ড শীতের কেউ আমাকে কম্বল দেয়নি। সন্তানদের গরম কাপড় কিনে দিতে গবাদি পশু বিক্রি করতে হয়েছে। এই অবস্থায় থাকলে অন্তত মানুষ না খেয়ে মরে যাবে। 

ঠান্ডায় কাবু হয়ে রমিছা বেগম বলেন, অনেকদিন পর সূর্যের দেখা পেয়েছি, সূর্যের গরম তাপ নিয়ে কাজে ফিরেছি। দিনমজুরের কাজ না করলে সংসার চালাবো কীভাবে। এই শীতে আমাদের কাজকর্ম করেই চলতে হবে। 

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, মানুষের পাশে সব সময় জেলা প্রশাসন আছে। জেলায় শীতার্ত ও অসহায় মানুষের মাঝে ইতোমধ্যে ২৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। জেলার পাঁচ উপজেলার নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে সরকারি কম্বল বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। এই শীতে কম্বল বিতরণসহ শীতের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে জেলা প্রশাসক মানুষের পাশে থাকবে।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরকে