চারপাশ ঘেরাও করে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে তিন মাস ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সাতটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নিহত হয়েছেন সাংবাদিকসহ দুজন। আতঙ্কের এই জনপদে এখন কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। নতুন করে যেন আর কোনো সহিংসতার ঘটনা না ঘটে, সে জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ৩০০ পুলিশ এবং ১৬ র‌্যাব সদস্য।

জেলা পুলিশের পাশাপাশি রাঙামাটি থেকে আনা হয়েছে ২০০ পুলিশ সদস্য। রয়েছেন পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ঊর্ধ্বতন ১০ কর্মকর্তা। শুক্রবার (১১ মার্চ) সকাল থেকে বসুরহাটের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় অবস্থান নিয়েছেন এসব সদস্য।

সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকেই বসুরহাট পৌর ভবনের চারদিক ঘিরে রেখেছেন পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরাও রেখেছেন কড়া নজরদারি। এ ছাড়া জিরো পয়েন্টে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু চত্বর, রুপালী চত্বর, উপজেলা হাসপাতাল গেট, কলেজ গেট ও উত্তর বাজার এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাবের সতর্কাবস্থান দেখা গেছে।

এ অবস্থায় একাধিক মামলায় গ্রেফতার-আতঙ্কে রয়েছেন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। স্থবির হয়ে পড়েছে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য। দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি চান আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ।

এদিকে কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আলাউদ্দিন নিহত হওয়ার ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিহত আলাউদ্দিনের ভাই এমদাদ হোসেন বাদী হয়ে ওই মামলা করেন। কিন্তু মামলার এজাহারে সমস্যা থাকায় মামলা রেকর্ড করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

টহলরত পুলিশ সদস্যরা

এ বিষয়ে নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলা রেকর্ড করা হয়নি। এজাহারে সমস্যা আছে। বাদীকে বলা হয়েছে। পরে তিনি ঠিক করে আনবেন বলেছেন।

জানা যায়, মামলায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে ১ নম্বর আসামি এবং তার ভাই সাহাদত হোসেন ও ছেলে মির্জা মাশরুর কাদের তাশিকসহ ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি ঢাকা পোস্টকে জানান, নতুন করে যেন আর কোনো সহিংসতার ঘটনা না ঘটে, সে জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ৩০০ পুলিশ, ১৬ র‌্যাব সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন ১০ কর্মকর্তা। এ ছাড়া পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগে বিবদমান কাদের মির্জা ও বাদল-সমর্থিত দুই গ্রুপের দফায় দফায় হামলা সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ দুজন নিহত হওয়ায় পর দোষীদের ছাড় না দিতে নির্দেশ দিয়েছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এদিকে কোম্পানীগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে (৫০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বিকেলে নোয়াখালী প্রেসক্লাব এলাকা থেকে সাদা পোশাকে একদল পুলিশ বাদলকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় বলে জানান তার ছোট ভাই রহিম উল্যাহ বিদ্যুত। পরে রাত পৌনে আটটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন।

হাসিব আল আমিন/এনএ