ময়মনসিংহ নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের অবৈধ চলাচল রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সিটি করপোরেশন। কঠোর পদক্ষেপের মধ্যেও থেমে নেই জালিয়াতচক্রের অপতৎপরতা। ব্যটারিচালিত মোটা চাকার রিকশার লাইসেন্স ও নিবন্ধনকার্ড জালিয়াতি করে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছিল টাকা। ভুয়া নিবন্ধন নম্বর সম্বলিত একটি রিকশা জব্দের পর সেই সূত্র ধরেই আটক হয়েছেন সুমন ঘোষ (৩৫) নামের এক যুবক। 

পরে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার আদেশ দেন মসিকের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করা হয়।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ নগরীর যানজট নিরসনে সিটি করপোরেশন বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে নিয়ন্ত্রণে নেয় কঠোর পদক্ষেপ। নিবন্ধিত যানবাহনকে তারিখ ভিত্তিক নির্দিষ্ট রং করে দেওয়া, স্মার্টকার্ড করে দেওয়া হয় যার মধ্যে একটি ডিজিটাল বারকোডে সকল তথ্য সংযুক্ত থাকে। 

অবৈধ যানবাহন ঠেকিয়ে যানজট নিরসনে এ উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রতারকচক্র তাদের জাল বিছিয়ে রিকশাচালকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। নকল লাইসেন্স ও নিবন্ধন কার্ড তৈরি করে প্রথমে ৩ হাজার টাকা করে ও পরে প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে আদায় করতেন সুমন ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। নগরীর স্বদেশী বাজার এলাকা থেকে এ ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছিল সুমন। হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক করা সুমন স্বদেশী বাজার এলাকার একটি দোকানে কাজ করতেন।

সম্প্রতি নগরীর কয়েকটি স্থান থেকে ভুয়া নিবন্ধন নম্বর সম্বলিত রিকশা আটকের পর সেই সূত্র ধরে খুঁজে বের করা হয় সুমন ঘোষকে। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। ওই সময় সুমনের কাছ থেকে দুটি জাল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও নম্বর প্লেট জব্দ করা হয়। বেশ কিছুদিন ধরে এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজ করছিল বলে স্বীকার করে সুমন। পরে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার আদেশ দিয়ে পুলিশে সোপর্দ ও থানায় মামলা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা বলেন, যানজট নিরসনে অবৈধ ব্যাটারি চালিত যান নিয়ন্ত্রণে নগর কর্তৃপক্ষ কার্যক্রম চালালেও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারণা করে টাকা হাতাচ্ছিল সুমন। প্রতিটি জাল লাইসেন্স ও নিবন্ধন কার্ড করে দিতে প্রথমে ৩ হাজার টাকা ও পরে প্রতিমাসে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে নিতো সে। প্রাথমিকভাবে অন্তত ২০টি যানবাহনকে জালিয়াতির মাধ্যমে লাইসেন্স দিয়ে টাকা হাতিয়েছেন বলে স্বীকার করেছে সুমন।

উবায়দুল হক/এমএএস