পাবনার ঈশ্বরদীতে তুচ্ছ ঘটনায় রিকশাচালক মামুন হোসেনকে গুলি করে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি যুবলীগ নেতা আনোয়ার উদ্দিনসহ (৪২) দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনোয়ারকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে পাবনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ এর বিচারক সুকান্ত সাহা রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে ও বুধবার রাতে পৃথকভাবে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার আনোয়ার উদ্দিন ঈশ্বরদীর শৈলপাড়া ১২ কোয়ার্টারের বাসিন্দা মৃত নূর উদ্দিনের ছেলে ও ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য। গ্রেপ্তার অপরজনের নাম ইব্রাহিম (২৬)। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর বিকেল ৩টার দিকে দুই আসামিকে পাবনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ এ তোলা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে আনোয়ারের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালতের বিচারক সুকান্ত সাহা তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর ইব্রাহিমের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এরপর তাদেরকে ঈশ্বরদী থানায় নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। বর্তমানে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের হেফাজতে রেখে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঈশ্বরদীর আরমবাড়িয়া এলাকা থেকে বুধবার আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর বৃহস্পতিবার ভোরে কুষ্টিয়া থেকে ইব্রাহিমকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আনোয়ারকে আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। আর ইব্রাহিমের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

এ নিয়ে মামলার এজাহারনামীয় মোট চার আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হলো। এর আগে গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ঈশ্বরদীর শৈলপাড়া এলাকা থেকে মামলার এক নম্বর আসামি কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা কামাল উদ্দিন এবং তার ভাতিজা হৃদয় হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। 

প্রসঙ্গত, গত ৪ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে ঈশ্বরদীর রেল গেটের পাশে কাচারীপাড়ায় ঈশ্বরদী ইপিজেড থেকে আসা দ্রুততগামী ভটভটি ও লেগুনার সংঘর্ষ হয়। এ সময় রিকশাচালক মামুনসহ স্থানীয়রা চালকদের বেপরোয়া গতিতে চলাচলে নিষেধ করে। এ ঘটনায় লেগুনাচালক ভটভটি চালকের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে তর্তাতর্কি হয়। 

পরে ফিরে গিয়ে লেগুনার মালিক কামাল ও আনোয়ারকে জানালে তারা ক্ষুব্ধ হন এবং আনোয়ার উদ্দিন তার দলবল নিয়ে স্থানীয়দের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে আনোয়ার তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে সেখানে মামুন ও রকিকে গুলি করেন এবং সুমনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তিনজনকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ রকি ও ছুরিকাঘাতে আহত সুমনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। 

এ ঘটনায় ৫ জানুয়ারি রাতে নিহত মামুনের মা লিপি খাতুন বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে ঈশ্বরদী থানায় মামলা করেন। মামলাটিতে কামাল উদ্দিনকে প্রধান আসামি ও তার ভাই আনোয়ার উদ্দিনকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে।

রাকিব হাসনাত/আরএআর