‘বাবা কি কমু আমার স্বামী ২৫ বছর আগে মইরা গেছে। স্বামী মরার পরে কোনো উপায় না পাইয়া ভিক্ষা করা শুরু করি। ভিক্ষা কইরা চার মেয়ের বিয়ে দিছি। আমার শুধু থাকার মধ্যে ঘরটা আছিল। আমি ভিক্ষা করে যা পাইতাম তা দিয়েই চলত আমাদের সংসার। আজকে ইউএনও স্যার সরকারের একটা দোকান দিছে। এহন আর আমার ভিক্ষা করতে হবে না। মরার আগে এটু আরাম করবার পামু।’ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় দেশ গড়বো সমাজসেবায়- এই স্লোগানকে সামনে রেখে ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় দোকানের মালামাল বিতরণের সময় কথাগুলো বলেন বৃদ্ধা হুনুফা (৫৮)। 

ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসার  (চা ও মনিহারী) জন্য দোকান বিতরণ করা হয়। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে উপজেলা অডিটোরিয়ামে নালিতাবাড়ী ৬ ইউনিয়নের ৬ জন ভিক্ষুককে এসব দোকান বিতরণ করা হয়।

নালিতাবড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, নালিতাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান, পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামালউদ্দীন, মরিচপুরান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী, কলসপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ প্রমুখ।
 
এ সময় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রত্যেককে তাদের নামসহ সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে। পণ্য সামগ্রী হিসেবে দোকানের জন্য গ্যাসের সিলিন্ডার, গ্যাসের চুলা, চায়ের কেতলি, বালতি, কলস, ফ্লাক্স, গ্লাস, চায়ের কাপ, মুড়ি, চানাচুর, বিস্কুট, আচারসহ নানা প্রায়োজনীয় জিনিসও দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, আজকে ভিক্ষাবৃত্তি করত এমন ছয়জন বৃদ্ধাকে সরকারি দোকান দেওয়া হয়েছে। আমাদের সবার উচিত এমন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্য করা। আমার খুব ভালো লেগেছে ছয়জন ভিক্ষুকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

শেখ সাঈদ আহম্মেদ সাবাব/আরকে