গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুক্রবার শুরু হওয়া মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হচ্ছে আজ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাত উপলকক্ষে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মুসল্লিদের ঢল নামতে শুরু করেছে। সবাই আখেরি মোনাজাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন। ভোগাড়া বাইপাস থেকে ইজতেমা মাঠের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। মুসল্লিরা এই পুরো পথ হেঁটে পাড়ি দিচ্ছেন ইজতেমা মাঠের উদ্দেশ্যে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে।

আখেরি মোনাজাতের অংশ নিতে দ্বীপ মোহাম্মদ এসেছেন ভালুকা থেকে। বোর্ড বাজার এলাকায় কথা হয় তার সঙ্গে তিনি বলেন, ভোর রাত ৪টায় পিক আপে করে ভালুকা থেকে রওনা হয়ে ভোগড়া বাইপাসে এলাকায় এসে ৬টায় কিছু সময় পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করি। পরিবহন না পেয়ে অন্যান্য মুসল্লিদের মতো নেমে হাঁটা শুরু করি। পুরো পথ হেঁটেই যাব।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইজতেমায় আখেরি মোনজাতের অংশ নিতে ভোরের আলো ফোঁটার পরপরই হাজার হাজার মুসল্লি হেঁটে ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। এর মধ্যে হঠাৎ দুই একটা মিনিবাস, পিক আপ, অটোরিকশার দেখা মিললেও মুসল্লিদের কারণে ধীর গতিতে চলছে সেগুলোও।

অপর মুসল্লি কারখানা শ্রমিক কায়সার বলেন, আমার বাড়ি বরিশালে, গাজীপুরের একটি সোয়েটার কারখানায় চাকরি করি। দীর্ঘদিনের ইচ্ছে ছিল ইজতেমা মাঠে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার। কিন্তু বরিশাল থেকে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে তা সম্ভব হচ্ছিল না। এবার কাজের সুবাদে এসেছি তাই সেই ইচ্ছে পৃরণ হচ্ছে। হাঁটতে কষ্ট হলেও মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েতের আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে।

শুধু আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ছুটে আসতে থাকেন শনিবার থেকেই। বাস, ট্রাক, মিনিবাস, কার, মাইক্রোবাস, ট্রেন, লঞ্চ ও স্টিমারে করে এসে টঙ্গীতে পৌঁছে অবস্থান নিতে শুরু করেন। রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন ভিড় এড়াতে শীত, কুয়াশা ও নানা ঝামেলা উপেক্ষা করে রাতেই টঙ্গীমুখো হন। এরআগে রোববার ভোর থেকে টঙ্গীমুখী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় দীর্ঘ পথ হেঁটে টঙ্গী পৌঁছতে হয়েছে লাখ লাখ মানুষকে। কয়েক লাখ মানুষ রাতেই ইজতেমার মাঠ কিংবা আশপাশের বাসাবাড়ি, ভবন, ভবনের ছাদ কিংবা করিডোর, সড়কের পাশে ফুটপাতে এমনকি গাছতলায় অবস্থান নিয়েছেন। সকাল ৮টার মধ্যে গোটা এলাকা জনতার মহাসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

শিহাব খান/আরকে