পটুয়াখালী টু ঢাকা নৌ রুটের সুন্দরবন লঞ্চের সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাক হত্যার বিচারের দাবিতে পটুয়াখালী পৌরবাসী ব্যানারে এক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা সুন্দরবন লঞ্চ বয়কট ঘোষণা করেছেন।

রোববার বিকেল ৪টার সময় পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনালে রাজ্জাক হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, রাজনৈতিক ও সকল শ্রেণির পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, রাজ্জাককে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ইউনুস ও মশিউর দুজনে মিলে এই হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেন। কোনোভাবে যেন এই হত্যাকারীরা প্রশাসনের হাত থেকে রক্ষা না পায়। যতদিন পর্যন্ত রাজ্জাক হত্যার বিচার না হবে ততদিন পর্যন্ত সুন্দরবন লঞ্চ বয়কট ঘোষণা করেন।

পটুয়াখালীর যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম শোয়েব বলেন, রাজ্জাক ভাই আমাদের সবার প্রিয় একজন ভাই। সকল দলমত নির্বিশেষে সবাই তাকে ভালোবাসেন। আমাদের একজন বিশ্বস্ত রাজ্জাক ভাইকে আমরা হারালাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি কোনোভাবে এই আসামিদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য তদবির বা ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন তাহলে আপনারা ভুল করবেন। পটুয়াখালীবাসী আপনাদের এই ভুলকে কখনও ক্ষমা করবে না।

পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রিফাত হাসান সজীব বলেন, রাজ্জাক ভাই আমাদের একজন বিশ্বস্ত কর্মী ছিলেন। এই সুন্দরবন লঞ্চ পটুয়াখালীর মানুষের কাছে পরিচিত করিয়ে দিয়েছেন রাজ্জাক ভাই। রাজ্জাক ভাইকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছেন তাদের বিচার দাবি করি। এর পাশাপাশি সুন্দরবন লঞ্চকে আমরা বয়কট ঘোষণা করলাম।

পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমি রাজ্জাকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে রাজ্জাককে ইউনুস ও মশিউর বিভিন্ন সময় ডিস্টার্ব করেছে তার ওপর অত্যাচার ও জুলুম করেছে। আমরা সুন্দরবন লঞ্চকে বয়কট ঘোষণা করলাম, যতদিন পর্যন্ত রাজ্জাকের হত্যার বিচার না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা সুন্দরবন লঞ্চে উঠবো না।

সুন্দরবন লঞ্চের মালিক আলহাজ সাইদুর রহমান রিন্টু মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটি বাবার তার যেমন দুটি সন্তান থাকে তেমনি রাজ্জাক ও ইউনুস আমার সন্তানদের মতো। কাউকে ছোট করে বা অন্য একজনকে বড় করে দেখার সুযোগ নেই। আইনের গতি অনুসারে এর বিচার হবে। এতে আমাদের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ থাকবে না।

অপরদিকে, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী মোসা. মিনারা আক্তার (৪২) বাদী হয়ে রোববার সকালে পটুয়াখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি করা হয়েছে ওই লঞ্চের কেরানি মো. মশিউর রহমান ও সুপারভাইজার মো. ইউনুসকে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক এ দুই লঞ্চ স্টাফকে পরবর্তীতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। 

পটুয়াখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক আসামি কেরানি মশিউর রহমান ও সুপারভাইজার মো. ইউনুসকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাহমুদ হাসান রায়হান/এমএএস