জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অপহরণ, খুনসহ নানাভাবে মানবাধিকার লঙঘনের বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এখানকার মানুষের মনে অসন্তোষ রয়েছে। এই এলাকায় উন্নয়ন বিঘ্নিত হচ্ছে, সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি। এসব সমস্যা সমাধানে যথাযথ মাধ্যমে পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে রাঙামাটির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট সম্মেলন কক্ষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যুগ্ম সচিব নারায়ণ চন্দ সরকার, সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, কমিশনের সদস্য কাওসার আহমেদ, মো. আমিনুল ইসলাম, কংজরী চৌধুরী, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ প্রমুখ।

গণশুনানিতে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষ অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিপ্রিয় পাহাড়ি-বাঙালি সবাই মানবাধিকার নিয়ে বাঁচতে চায়। কিন্তু শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ অবৈধ অস্ত্রের কারণে নিজ বাড়িতে থাকতে পারে না। আমরা নিজ বাড়িতে নিরাপদে বেঁচে থাকার অধিকার চাই। চুক্তির পর পাহাড়ে শান্তি না ফেরায় পাহাড়ে বসবাসকারী পাহাড়ি-বাঙালি উভয়ে অশান্তিতে বসবাস করছে। 
পাহাড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে সকল সম্প্রদায়কে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদার মূল কারণ পাহাড়ে বিভিন্ন আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলো। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা না হলে পাহাড়ে কোনোদিন শান্তি ফিরবে না। চুক্তির পরে পাহাড়ে ২৫টির বেশি গণহত্যা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতে জুম্ম জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাহাড়ে পর্যটনের নামে ভূমিহারা হচ্ছে স্থানীয়রা। এসব বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান অংশগ্রহণকারীরা।

গণশুনানি চলাকালে সমাবেশের বাইরে স্বজনহারা ও বিভিন্ন সময় ক্ষতিগ্রস্তরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে প্রতিকার চান।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারি থেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ ও সদস্যবৃন্দের খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলা সফর শুরু হয়েছে।

মিশু মল্লিক/এমজেইউ