সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদীতে আবারও শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। অসময়ে নদী ভাঙনের কবলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই থেকে চরসলিমাবাদ ভূতের মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে শুকনো মৌসুম হওয়ায় এখন ভাঙন রোধে কোনো বরাদ্দ না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নদী ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে বিনাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সম্ভুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সম্ভুদিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, পয়লা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, চৌবারিয়া বিএম কলেজ, বাঘুটিয়া কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ ৫০টি বসতবাড়ি এবং বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।

বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, গত বর্ষা মৌসুমে বিনানই থেকে চরসলিমাবাদ এলাকা পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙন দেখা দিলে সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ আবারও এখানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে প্রায় ৫শ মিটার দূরেই রয়েছে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এভাবে আর কয়েকদিন চলতে থাকলে প্রায় ৫ থেকে ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছি।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, আমরা শুনেছি চৌহালীর কিছু জায়গায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিন্তু শুকনো মৌসুমের কারণে ভাঙন রোধে এখন কোনো বরাদ্দ না থাকায় আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে বর্ষা মৌসুমের আগেই বরাদ্দ পেলে তখন ভাঙন রোধে কাজ করা হবে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মিলটন হোসেন বলেন, চৌহালীর বাঘুটিয়া ইউনিয়নে নদী ভাঙনের বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে চিঠির মাধ্যমে জানালে আমি দুইদিন আগে সেখানে লোক পাঠিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভাঙনের বিষয়টি জানিয়েছি। শুকনো মৌসুমের কারণে বরাদ্দ না থাকায় আমরা ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, চৌহালীতে নদী ভাঙনের কথা শুনেছি এবং খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আমরা বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। বরাদ্দ পাশ হলেই সেখান কাজ শুরু করা হবে।

শুভ কুমার ঘোষ/আরকে