কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ইভটিজিংয়ের বিচার চাওয়ায় আবু বকর (৫৭)  নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার রামদী ইউনিয়নের মোজরাই মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে উত্তেজিত জনতা।

নিহত আবু বকর মুজরাই মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে। অভিযুক্তরা হলেন- একই গ্রামের রবির ছেলে বাবুল (১৮), আলমের ছেলে রিশাদ (১৬) ও সালামের ছেলে পারভেজ (১৬)।

রামদী ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৭, ৮ ও ৯ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নূরজাহান বেগম ও ৯ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আসাদ মিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তারা জানান, কিছু দিন আগে দুর্ঘটনায় আহত হন কুলিয়ারচর উপজেলার বীর কাশিমনগর ফেদাউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হাসিনা বেগম। উপজেলার রামদী ইউনিয়নে মুজরাই মধ্যপাড়া গ্রামের ওই শিক্ষিকাকে দেখতে আসে ওই বিদ্যালয়ের চার ছাত্র-ছাত্রী। এ সময় রাস্তায় ওই ছাত্রীদের অশালীন কথাবার্তা বলেন ওই গ্রামের বাবুল, রিশাদ, পারভেজসহ কয়েকজন কিশোর। 

এ ঘটনা শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষিকা হাসিনা বেগমকে জানায়। হাসিনা বেগম বিষয়টি আবু বকরের স্ত্রী আনিছা বেগমকে বলেন। আনিছা বেগম বিষয়টি নিয়ে রিশাদের বাবা আলমের কাছে বিচার দেন। আলম তার ছেলে রিশাদকে শাসন করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আলমের ছেলে রিশাদ, সালামের ছেলে পারভেজ ও রবি মিয়ার ছেলে বাবুলসহ আরও কয়েকজন আবু বকরের বাড়িতে গিয়ে আনিছা বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও তাকে খুঁজতে থাকেন। এ সময় আনিছার স্বামী আবু বকর বাড়িতে এসে আনিছাকে খোঁজার কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা আবু বকরকে বেধড়ক মারপিট করেন। এ সময় আবু বকরের ভাতিজা সজীব বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করে হামলাকারীরা। পরে গুরুতর আহত আবু বকরকে উদ্ধার করে ভাগলপুর জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে রিশাদ, বাবুল ও পারভেজদের বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

কুলিয়ারচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। এলাকার উত্তেজিত জনতা ওই কিশোরদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে বলে শুনেছেন তিনি। 

এসকে রাসেল/আরএআর