শেরপুর সদর উপজেলার ভূমিহীন ও স্বামীহারা বৃদ্ধা সকিনা বেগম। অন্যের বাড়ির ভাঙা রান্নাঘরে তার বসবাস। শীতের রাতে বাতাসের মধ্যে অনেক কষ্টে রাত কাটে তার। অনেকের কাছে গিয়েও তার ভাগ্যে জোটেনি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর। তাই বৃদ্ধা সকিনা বেগম হতাশ হয়ে বলেন, ‘সরকারি একটা ঘর পাইয়া আরাম-আয়েশ কইরা কী মরবার পামু?

২নং চরশেরপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বালুরঘাট গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধা সকিনা বেগম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বাবা কী কমু, আমার স্বামী জুলহাস আলী ১২ বছর আগে মারা গেছেন। আমার কোনো ছেলেমেয়ে নেই। স্বামী থাকতে ভাড়া থাকতাম। মাইনসের বাড়ি ভাড়া না দিলে কি থাকবার দেয়? তাই এখন মাইনসের পাকঘরে (রান্নাঘরে) থাহি।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে রোজগার করার কেউ নেই। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছি, আগের মতো শক্তি পাই না। কামায় করবো ক্যামনে। এজন্য ঘুরে ঘুরে অন্যের কাছ থেকে যা পাই তাই খাই। আমি এখন পযর্ন্ত বয়স্ক ভাতার কার্ডটিও পায়নি। যদি পাইতাম তাহলে যে কয়টা টাহা পাইতাম তা দিয়ে চলবার পাইতাম। আমারে মাইনসে আর কতদিন তাদের বাড়িতে রাখব। যদি বিছানায় পইরা যাই তাহলে মাইনসে আর ঠাঁই দিব না। আমি যদি একটা সরকারি ঘর পাইতাম বৃদ্ধ বয়সে আরাম-আয়েশে করে বাঁচবার পায়তাম।’

স্থানীয় সিদ্দিকউল্লা খান বলেন, স্বামীহারা বৃদ্ধা সকিনা বেগম অন্যের বাড়িতে থাকেন। তার ছেলেমেয়ে নাই। স্বামীর কোনো জমিও নেই। মানুষ যা দেয় তা খেয়েই কোনোরকম দিন কাটাচ্ছেন।

৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান খোকন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীনদের জন্য সরকারি ঘর দিচ্ছেন। আমাদের গ্রামের সকিনা বেগমের ঘরবাড়ি, স্বামী, ছেলেমেয়ে কেউ নেই। অন্যের বাড়িতে থাকেন। এই বৃদ্ধাকে যদি একটি সরকারি ঘর দেওয়া হয় তাহলে খুবই ভালো হত।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ২নং চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃদ্ধা সকিনা বেগম যেন দ্রুত একটি ঘর পান সেই ব্যবস্থা করা হবে।

শেরপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহনাজ ফেরদৌস বলেন, আমি সকিনা বেগমের বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। তিনি যদি আসলেই ভূমিহীন হয়ে থাকেন তাহলে খোঁজ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

এমজেইউ