সড়কে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতকের ঠাঁই হলো ছোটমনি নিবাসে
হবিগঞ্জের মাধবপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীর কোলজুড়ে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক শিশু। রোববার (২২ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় জগদীশপুর মুক্তিযুদ্ধ চত্ত্বর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে শিশুটির জন্মের সময় স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সচিবসহ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সুস্থ-স্বাভাবিক প্রসবের পর মা ও শিশুটির ঠাঁই হয় মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে রেজিস্ট্রার খাতায় শিশুটিকে ‘অজ্ঞাত’ হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না যেতেই পরিচয় সংকটের কারণে শিশুটির ঠিকানা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দায়িত্বশীলরা।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে শিশুটির ঠিকানা নির্ধারণের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জের আদালতে পাঠানো হয়। রাত ৮টার দিকে আদালত শিশুটিকে সিলেটের ছোটমনি নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেয়। একইসঙ্গে শিশুটির মাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগে ভর্তির সিদ্ধান্ত দেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন : হঠাৎ হাজির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব!
হবিগঞ্জ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাশেদুজ্জামান চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে আদালতের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে বলেন, শিশুটির মা একেবারেই মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তার সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। আবার শিশুটির পিতৃপরিচয়ও নেই। তাই তাকে সিলেটের ছোটমনি নিবাসে পাঠানো হয়েছে এবং শিশুর মাকে মানসিক চিকিৎসার জন্য সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আদালত।
বিজ্ঞাপন
এদিকে শিশুর জন্মের পর থেকে কয়েকজন তাকে দত্তক নিতে হাসপাতাল থেকে আদালত পর্যন্ত আসেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের বিফল হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয়। তবে কেউ দত্তক নিতে আগ্রহী হলে ছোটমনি নিবাসে যোগাযোগ করতে বলেছেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাশেদুজ্জামান চৌধুরী।
সোমবার আদালতে আসার সময় নবজাতক ও তার মায়ের দায়িত্বে ছিলেন মাধবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুহিলা আক্তার। তিনি বলেন, ওই নারী নিজের সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এমনকি শিশুটির প্রতিও কোনো আগ্রহ নেই।
মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইশতিয়াক আল মামুন বলেন, পিতৃপরিচয় না থাকা ও মা মানসিকভাবে পুরোপুরি অসুস্থ হওয়ায় নবজাতককে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছিল।
আজহারুল মুরাদ/এমজেইউ