কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদন হচ্ছে শুঁটকি। সুস্বাদু হওয়ায় দেশে ও বিদেশের রয়েছে আলাদা চাহিদা। ফলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতি বছরই এ শুঁটকি রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে শুটকি প্রক্রিয়াজাত করণের স্থায়ী পল্লী না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন ব্যবসায়ীসহ শুটকি শ্রমিকরা।

বিপুল রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা মৌসুম নির্ভর এ ব্যবসার স্থায়ীত্বের পাশাপাশি স্থায়ী পল্লী নির্মাণ এবং এ শিল্পের পরিধি বাড়াতে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি সকলের।

জানা যায়, সামুদ্রিক মাছের সহজলভ্য প্রাপ্তির ফলে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কুয়াকাটায় বেশ কয়েকটি পয়েন্টে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী শুঁটকি পল্লী। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত কার্যক্রম। এ কাজে অংশ নেয় নারী, পুরুষ ও শিশুসহ পরিবারের সকল সদস্যরা। পোয়া, সোনাপাতা, মধুফাইস্যা, রূপচাঁদা, শাপলাপাতা, চাপিলা, ফাইস্যা, লইট্রা, চিংড়ি, ছুড়ি, হাঙ্গর, ভোল ও কোড়ালসহ প্রায় ৫০ প্রজাতির কাঁচা মাছ সংগ্রহ করে খোলা জায়গায় বাঁশের মাচা বানিয়ে রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় শুঁটকি। কোনো কীটনাশক ছাড়া শুধুমাত্র লবণ মেখে প্রক্রিয়াজাত করায় এর রয়েছে আলাদা স্বাদ ও চাহিদা। তবে নির্দিষ্ট কোনো পল্লী না থাকায় বছরের ৬ মাস চলে এ ব্যবসা। ফলে বছরের বাকি ৬ মাস কর্মহীন এবং নায্য মজুরি পায় না বলে দাবি শুটকি শ্রমিকদের। তাই তারা সরকারের কাছে স্থায়ী পল্লী নির্মাণের দাবিসহ আর্থিক প্রনোদনার দাবি জানিয়েছেন।

শুঁটকি শ্রমিক আব্দুর রহিম বলেন, শুঁটকি প্রকিয়াজাত করার কোনো নির্ধারিত জায়গা না থাকায় আমরা সৈকতের পাশে মাছ শুকাই। অনেক সময় উচ্ছেদ অভিযানে সব কিছু ভেঙে ফেলে। আবার শুঁটকি ব্যবসায় আসা কষ্টের হয়ে যায়। শুঁটকি ব্যবসায় আলাদা করে লোনও পাই না আমরা।

পর্যটক সাকিব বলেন, কুয়াকাটার শুঁটকির অনেক নাম রয়েছে। এখানে এসে নিজ চোখে শুঁটকি করা দেখেছি তারা কোনো ক্যামিকেল ব্যবহার করে না। আমাদের এলাকার চেয়ে দাম অনেক কম। মানও ভালো তবে স্থায়ী পল্লী থাকলে আরও পরিছন্নভাবে করতে পারতো।

শুঁটকি ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, অনেক বছর ধরে শুঁটকি ব্যবসা করি তবে স্থায়ী যায়গা না থাকায় কিছু দিন পরে উঠে যেতে হয়। সরকারের কাছে আমরা স্থায়ী শুঁটকি পল্লী চাই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংকর চন্দ্র বদ্য বলেন, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করণে শ্রমিকদের আর্থিক প্রনোদনাসহ আমরা কী কী সুযোগ-সুবিধা দিতে পারি এ ব্যপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকতাসহ ঊধ্বর্তন কর্তপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

হাফিজুর রহমান আকাশ/আরকে