সময়ের পরিক্রমায় চাষাবাদে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষকরা উন্নত চাষাবাদ শুরু করেছেন। গরু দিয়ে হালচাষ অনেকটা কমে গেছে। গরু পালনের খরচ ও পাওয়ার টিলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করছেন কেউ কেউ। এতে একদিকে অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে অন্যদিকে চাষাবাদে সময় কম লাগছে। 

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেসরা ইউনিয়নের হরিণখোলা বিলে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করতে দেখা দেখা গেছে গোপাল মন্ডল নামে এক কৃষককে। চার বছর ধরে গরুর পরিবর্তে ঘোড়া দিয়ে জমি তিনি চাষাবাদ করে আসছেন।

কৃষক গোপাল মন্ডল বলেন,পাওয়ার টিলারের দাম ও গরু পালনের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেদিক বিবেচনা করে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ কৃষকদের জন্য অনেকটা সাশ্রয়ী। চার বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করছি। গো খাদ্যের দাম কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। চাষাবাদের উপযোগী গরুকে রোজ অনেক টাকার খাবার দিতে হয়। সেদিক দিয়ে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করা অনেক সাশ্রয়ী। নিজের জমির পাশাপাশি বাড়তি সময়ে অন্যের জমি চাষ করেও বেশ টাকা আয় করছি। ঘোড়া দিয়ে হালচাষ, মই দেওয়াসহ অন্য সকল কাজ করা যায়। তাছাড়া শীতের সময় গরু দিয়ে জমি চাষ করাটা একটু কষ্টের। সেক্ষেত্রে ঘোড়া দিয়ে চাষের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা হয় না। 

সুবীর মন্ডল নামে অপর এক কৃষক বলেন, ঘোড়া দিয়ে হালচাষ এটি বাবা-দাদাদের মুখে শুনেছি। তবে দিনে দিনে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ। এটি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসে। যদিও অনেকের কাছে বিষয়টি নতুন তবে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের বিষয়টি অঞ্চল ভেদে আগে থেকে প্রচলিত রয়েছে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জামাল উদ্দীন জানান, ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ হচ্ছে বিষয়টি আমি নিজেও দেখেছি। এটি শখের বসে অনেকে করে থাকেন আবার অনেকে গরু না থাকার কারণে এবং অর্থ সাশ্রয়ের কথা বিবেচনা করে এটা করে থাকেন। এই বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভিমত জানা হবে।

সোহাগ হোসেন/আরএআর