বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অঝোরে কাঁদলেন নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম হোসেন। শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে হাতিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে তার বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এ সময় বক্তব্য দিতে গিয়ে কাঁদেন তিনি। 

জানা যায়, ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মো. সেলিম হোসেন। প্রায় দেড় বছরে ঝড় জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। এ সময় অসহায় মানুষের মাঝে দ্রুত সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি নিজস্ব তহবিল থেকে উপহার পৌঁছে দিয়েছেন। নিজস্ব তহবিল থেকে গৃহহীন মানুষের জন্য নির্মাণ করেছেন আবাসন। 

ইউএনও সেলিম হোসেন বলেন, মূল ভূখণ্ডের বাইরের একটা দ্বীপ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের অনন্য সাধারণ জায়গা। প্রতিনিয়ত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কাটাতে হয়েছে। তবে এখানকার মানুষের আন্তরিকতা আমার সারাজীবন মনে থাকবে।

তিনি বলেন, দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার প্রতিটি মানুষ ভালো থাকুক। আমার কর্মজীবনের সেরা সঞ্চয় আপনাদের ভালোবাসা। সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে বদলিজনিত কারণে কোনো জেলায় বা উপজেলায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ নেই। উপজেলায় কর্মরত অবস্থায় সহকর্মী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অনেক রকমের সহায়তা আমি পেয়েছি। কাজ আদায় করার জন্য হয়তো কারও বিরাগভাজন হয়েছি। 

সেলিম হোসেন বলেন, অনেক সময় ইতিবাচক আবার কখনো নেতিবাচকভাবে মানুষকে উপস্থাপন করা হয়। খোলা চোখে সব কিছু দেখা যায় না। চোখের আড়ালেও অনেক কিছু থাকে। তবে নিজের অজান্তেও যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, কারও প্রতি অন্যায় করে থাকি তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। হাতিয়ার মানুষ খুব আন্তরিক। আমি কোনোদিন তাদের ভুলতে পারব না।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম সারোয়ারের সভাপতিত্বে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. কেফায়েত উল্যাহ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম, জেলা পরিষদের সদস্য মহিউদ্দিন মুহিনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানের শেষাংশে উপজেলার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে ইউএনও সেলিম হোসেনকে বিদায় জানান। 

হাসিব আল আমিন/আরএআর