বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম উপজেলা) ও বগুড়া-৬ (সদর উপজেলা) আসনের  উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন সদর আসনে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন স্বতন্ত্র পার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। এছাড়াও এ আসনে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে দাবি করেন তিনি। 

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় বগুড়া বাংলা স্কুল মাঠে ইলেক্ট্রনিকং ভোটিং (ইভিএম) মেশিনসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণকালে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা সিনিয়র নিবাচন কমকর্তা মাহমুদ হাসানকে হিরো আলম এসব কথা জানান।

হিরো আলম জানান, ভোটগ্রহণের দিনে তার সঙ্গে ১০ জন এজেন্ট থাকার অনুমোদন দিতে হবে। অতীতের নির্বাচনে তার ওপর ভোটকেন্দ্রে হামলা হয়েছিল। সেকারণেই তার সঙ্গে বেশি সংখ্যক এজেন্ট রাখতে হবে। বেশি মানুষ সঙ্গে থাকলে কেউ হামলা চালাতে সাহস পাবে না। সেই সঙ্গে ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের আহ্বান করেন। 

আগামীকাল বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এই দুই সংসদীয় আসনে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। ভোট হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে। 

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানা গেছে, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১১২টি। আর ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭৭৭টি। এর মধ্যে অস্থায়ী কক্ষ থাকবে ৪২টি। এই আসনে মোট প্রিসাইডিং কর্মকর্তা থাকবে ১১২ জন। সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৭৭৭ এবং পোলিং অফিসার থাকবে ১ হাজার ৫৫৪ জন। 

আর বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। ভোটকেন্দ্র হবে ১৪৩টি ও কক্ষ থাকবে ১ হাজার ১৭টি। এ আসনে ১৪৩ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ১ হাজার ১৭ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ২ হাজার ৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা নির্বাচনে থাকবেন । 

গোয়েন্দা শাখার সূত্র জানা গেছে, বগুড়ার দুই আসনের ২৫৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৫৮টিকেই ঝুঁকিপূর্ণ (অধিক গুরুত্বপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে বগুড়া-৬ সদর আসনে মোট ১৪৩টির মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৯টি। বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনেও মোট ১১২টির মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৭৯টি।

দুই আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বগুড়া-৪-এর কাহালু উপজেলার ভোটকেন্দ্রগুলো। ওই উপজেলায় ৬৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টিই ঝুঁকিপূর্ণ। ওই আসনের নন্দীগ্রাম উপজেলার ৪৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যদিকে বগুড়া-৬ সদর আসনে ১৪৩টি কেন্দ্রের মধ্যে সাধারণ কেন্দ্র ৬৪টি। বাকি ৭৯টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

বগুড়া জেলা সহকারী  রিটার্নিং অফিসার ও জেলা সিনিয়র নিবাচন কমকর্তা মাহমুদ হাসান বলেন, কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ভোটারদের আশ্বস্ত করছি ভোটকেন্দ্রে যেতে তাদের কোনো প্রকার সমস্যা হবে না।

তিনি আরও জানান, এ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণে ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি মোতায়ন থাকবে ১৬ প্লাটুন বিজিবি। এছাড়াও ভোটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাড়ে ৪ হাজার নিরাপত্তাকর্মী কাজ করবেন। 

আলমগীর হোসেন/আরকে