‘হঠাৎ করেই বাড়িতে আগুন লাগলো। আমার ভাইটা এইভাবে আগুনে পুড়ে মরলো, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু আগুনের কারণে কিছুই করতে পারলাম না। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুধু দেখেছি সব পুড়ে যাচ্ছে। এই ভাবে সব শেষ হয়ে যাবে কোনদিন ভাবি নাই। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভাতে নেভাতে সব শেষ।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমনভাবে কথাগুলো বলছিলেন পিরোজপুরে বসতঘরে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া সোহেল উদ্দিন হাওলাদারের (২৮) বড় ভাই নাসির উদ্দিন হাওলাদার।

তিনি বলেন, মা এখনো জানে না। তাকে জানানো হয়নি। আস্তে আস্তে জানাব। সে শুনলে তো সহ্য করতে পারবে না। রাতে আমরা আগুন দেখে যখন পাশের ঘর থেকে বের হয়েছি ততক্ষণে সব শেষ। আমি ছালা (বস্তা) গায় দিয়ে উদ্ধার করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আগুন এতোটা বেশি ছিল আর কাছেই যেতে পারিনি।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরের দিকে পিরোজপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাব অফিসার আব্দুর রশিদ হক। নিহত সোহেল পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের ভাইজোড়া এলাকার নজরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাব অফিসার আব্দুর রশিদ হক বলেন, স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত সময়ে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি কিন্তু ততক্ষণে ঘুমন্ত অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের উৎপত্তি হয়েছে।

পিরোজপুর সদর থানা পুলিশের অফিসারর ইনচার্জ (ওসি) আ. জা. মো. মাসুদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পিরোজপুর জেলা প্রশাসক জাহেদুর রহমান এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মরিয়ম জাহান। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং সরকারিভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। 

আবীর হাসান/আরকে