মহিপুরের স্বনামধন্য মহিপুর কো অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেছেন। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে স্কুল মাঠে কয়েকশ ছাত্রছাত্রী সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা সভাপতির বিভিন্ন দুর্নীতি এবং অনিয়মের কথা স্লোগানের মাধ্যমে তুলে ধরে।

সরজমিনে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ ১০ম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাসে প্রবেশ করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (জাহাঙ্গীর ম্যানেজার)। শিক্ষার্থীদের সামনে সহকারী শিক্ষক মজিবুর রহমানকে পাঞ্জাবি এবং টুপি পরে বিদ্যালয়ের আসতে নিষেধ করেন এবং প্রধান শিক্ষককে সহকারী শিক্ষকের বেতন বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেন। পাঞ্জাবি এবং টুপির বিরোধিতা করায় খেপে যান ছাত্র-ছাত্রীরা। শুক্রবার, শনিবার ও রোববার তিনদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আজ সোমবার তারা সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করেন। এ সময় ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্যরা উপস্থিত থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের শান্ত করার চেষ্টা করে। ছাত্র-ছাত্রীরা তাতে কর্ণপাত করেননি। পরে সভাপতি এসে মৌখিকভাবে তাদের সামনে তার পদত্যাগ ঘোষণা করলে ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়ি ফিরে যান।

দশম শ্রেণির ছাত্র আরিফ বলেন, সে আমাদের সামনে আমাদের শিক্ষককে ধমক দিয়েছেন এবং তার টুপি-পাঞ্জাবি নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা এটা কোনভাবেই মেনে নেব না। তাই আমরা তার পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। 

মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম জানান, বিষয়টি যখনই মজিবর স্যার আমাকে জানিয়েছেন আমি তখন সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু সভাপতি জানিয়েছেন শ্রেণি  শিক্ষকের পোশাকে ময়লা ছিল সেই বিষয়ে কথা বলেছেন। 

ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, আমি দশম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস নিছিলাম। তখন সভাপতি প্রবেশ করেন, আমাকে পাঞ্জাবি-টুপি পরে কেন এসেছি সেজন্য ধমক দেন এবং প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেন যদি আমি পাঞ্জাবি-টুপি পরে ক্লাসে আসি তাহলে যেন আমার বেতন বন্ধ করে দেন। আর এখন তিনি বলছেন আমার পোশাকে নাকি ময়লা ছিল। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার পোশাকটি ছিল ধোয়া ও ইস্ত্রী করা।

ম্যানেজিং কমিটির একাধিক সদস্য বলেন, ব্যক্তির দায় সংগঠন নেবে না। সংগঠনের যদি কেউ অপরাধ করে সেটি তাকেই সমাধান করতে হবে।

অভিযুক্ত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন, যে কোন জিনিসের একটি রুলস আছে সে বড় পাঞ্জাবি টুপি পরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস করতে পারেন না এবং তার পাঞ্জাবিতে ময়লা ছিল। তাই তাকে এ কথা বলেছিলাম তবে এটি আমার ভুল হয়েছে।

হাফিজুর রহমান আকাশ/আরকে