রংপুর বিভাগের আট জেলার মানুষের চিকিৎসা সেবাপ্রাপ্তির অন্যতম ভরসাস্থল রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল। এখানে প্রতিদিন কমপক্ষে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে। অথচ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছরেও মৃতদেহের ভিসেরা পরীক্ষার (অভ্যন্তরীণ অঙ্গ পরীক্ষা) কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।

রমেক হাসপাতালে ভিসেরা পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় যেতে হয় রাজশাহীতে। ফলে মামলা সংক্রান্ত ঘটনায় ভুক্তভোগীদের বিচার পেতে দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি হচ্ছে। ভিসেরা রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে মামলার তদন্ত কার্যক্রম। অজ্ঞাত মরদেহের রক্তের নমুনা সংগ্রহে পড়তে হচ্ছে নানা জটিলতায়।

রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজে আসা হত্যা, রহস্যজনক মৃত্যু ও সন্দেহজনক মৃত ব্যক্তিদের শুধু ময়নাতদন্ত করা হয়। ভিসেরা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা রংপুর মেডিকেল কলেজে নেই। এই পরীক্ষা করতে রাজশাহীর ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখান থেকে রিপোর্ট পেতে দীর্ঘ সময় লাগছে। ফলে মামলার তদন্ত কাজ বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি মামলার বিচার শুরু হওয়ার প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ হচ্ছে।

বর্তমান সরকারের আমলে প্রতিটি বিভাগীয় শহরের ফরেনসিক ল্যাবে ভিসেরা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলেও রংপুরে তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, ভিসেরার বিষয়টি সিআইডি পুলিশ মনিটরিং করেন। তারাই ফরেনসিক ল্যাবে ভিসেরা নিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আদালতে রিপোর্ট প্রদান করেন।

সূত্র মতে, গত জানুয়ারি মাসে রমেকে ময়নাতদন্ত হয়েছে ২১টি মরদেহের। এর মধ্যে ৮-১০টির ভিসেরা পরীক্ষার জন্য রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে ভিসেরা পাঠানোর প্রক্রিয়া একটু এদিক-সেদিক হলে রিপোর্টের ফলাফল অন্যরকম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ভিসেরা রিপোর্ট রাজশাহীতে পাঠানোর পরে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কারণ মরদেহের ভিসেরা রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মামলাও গতি পায় না।

রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. রাজিবুল ইসলাম জানান, ভিসেরা রিপোর্টের জন্য আমাদের রাজশাহী ফরেনসিক বিভাগের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ভিসেরা পরীক্ষার বিষয়টি সিআইডি পুলিশ দেখাশোনা করে। তারাই এগুলো পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগে পাঠায়।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরকে