ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিখোঁজ শহিদুল ইসলামের (৩৮) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মরদেহটি পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদের সংযোগস্থল মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় ভেসে ওঠে। সেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেন চরভদ্রাসন ও ঢাকার দমকল বাহিনীর সদস্যরা। এ নিয়ে এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছয় জনে দাঁড়াল। 

শহিদুল ইসলাম গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুটি স্পিডবোটের সংঘর্ষের সময় মৈনট ঘাট থেকে আগত বোটের যাত্রী ছিলেন। তিনি একজন ব্যবসায়ী। ঢাকায় তার ইলেকট্রিক সামগ্রীর দোকান রয়েছে। তিনি  চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের ফজলেখাঁর ডাঙ্গী গ্রামের শেখ চাঁন মিয়ার ছেলে। তিনি বিবাহিত এবং দুই মেয়ের বাবা।

শহিদুলের স্ত্রী যুথী আক্তার বলেন, পারিবারিক কাজে গত রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাড়িতে আসছিলেন শহিদুল।

চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার মুর্তজা ফকির বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জানতে পারি ওই এলাকা দিয়ে একটি মরদেহ নদী দিয়ে ভেসে যাচ্ছে। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মন্ডল বলেন, মরদেহটি স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিখোঁজ শহিদুলের বলে শনাক্ত করেছে তার বড় ভাই মো. শাহজাহান।

চরভদ্রাসন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির বলেন, স্পিডবোট দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিখোঁজ ছিলেন বলে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুইজন ও গত বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) আরও দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার সর্বশেষ নিখোঁজ ব্যক্তি শহিদুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি দাফন করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে শহিদুলের পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। নিখোঁজের আর কোনো তালিকা না থাকায় উদ্ধার অভিযান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে  ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদীতে দুই স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যে একটি স্পিডবোট মৈনট থেকে যাত্রী নিয়ে গোপালপুর ঘাটের দিকে আসছিল। অন্যদিকে গোপালপুর ঘাট থেকে একটি যাত্রীবিহীন স্পিডবোট মৈনট ঘাটের দিকে যাওয়ার পথে ঘন কুয়াশার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওইদিন একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ দুর্ঘটনায় মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত তিনজন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জহির হোসেন/আরএআর