পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান হৃদয় হোসেন (২১)। কিন্তু প্রবাস জীবনের এক মাস না যেতেই কাজ করা অবস্থায় গুরুতর আহত হন তিনি। অবশেষে শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টার দিকে মালয়েশিয়ার কেল এলাকার পামথিং হাসপাতালে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হৃদয়।

হৃদয় হোসেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের জামতৈল উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।

হৃদয়ের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারি পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে কাজের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যান হৃদয়। সেখানে কেল এলাকায় একটি বহুতল ভবনে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করছিলেন। গত ২৮ জানুয়ারি কাজ করার একপর্যায়ে ভবনটির উপর থেকে একটি ভারী মেশিন তার ওপর পড়ে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে অন্য শ্রমিকরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে মারা যান হৃদয়। সন্তানের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন হৃদয়ের মা। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্বজনরাও।

হৃদয়ের বোন সালমা খাতুন বলেন, আমরা তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে বড় ভাই বছর দশেক আগে হারিয়ে গেছে, মেজ ছিল হৃদয়। পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে নানা জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে মালয়েশিয়া যায় হৃদয়। কিন্ত সেখানে গিয়ে এক মাসের বেতন না পেতেই লাশ হলো আমার ভাই।

তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে আমাদের দাবি, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর যেন হৃদয়ের মরদেহটা দ্রুত দেশে পাঠাতে সহায়তা করে। পাশাপাশি আমাদের এই ঋণগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, আমরা হৃদয়ের মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা করছি। এছাড়া ঋণগ্রস্ত হৃদয়ের পরিবারকে ইউনিয়ন পরিষদ ও ব্যক্তিগতভাবে সহায়তা করা হবে।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের জেলা সমন্বয়কারী ফাহমিদা আহসান বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবস্থায় হৃদয় নামে এক শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আমরা হৃদয়ের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করার চেষ্টা করবো।

শুভ কুমার ঘোষ/এমজেইউ