বিজিবির মানহানি মামলার চার্জ গঠন
কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবির তল্লাশি চৌকিতে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ করায় এক নারী এনজিও কর্মীর বিরুদ্ধে বিজিবির করা ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলার অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
সোমবার (১৫ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহর আদালতে ৫০০ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। একই সঙ্গে পরবর্তী তারিখ থেকে বিচার কাজ শুরু করার আদেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক।
বিজ্ঞাপন
আদালত চত্বরে বিজিবির আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশের দায়িত্বশীল একটি বাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ এনে চরম মানহানি করা হয়েছে। এনজিও কর্মী ফারজানা আক্তারের আইনজীবীরা তার অভিযোগের বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওই সময় তার দেওয়া বক্তব্য আমাদের সংরক্ষণে ছিল। যার ফলে আদালত ৫০০ ধারায় অভিযোগ গঠন করে পরবর্তী বিচার কাজের জন্য আদেশ দেন।
ফারজানার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর শুক্কুর এ আদেশে বিচার পাননি বলে অভিযোগ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিজ্ঞ আদালতকে অভিযোগ গঠন না করার জন্য আবেদন করেছিলাম। কারণ মামলাটি একজন এনজিও কর্মীকে হয়রানির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। কিন্তু আদালত অভিযোগ গঠন করেছে। নিম্ন আদালতে যেহেতু সুবিচার পায়নি আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
এর আগে গত ১১ মার্চ এ অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য থাকলেও আদালত তা পিছিয়ে ১৫ মার্চ ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ অক্টোবর টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের দমদমিয়া চেকপোস্টে নিয়মমাফিক অন্যদের সঙ্গে ব্লাস্টের এক নারী কর্মীকে তল্লাশি করা হয়। পরে ওই নারী বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। তার বক্তব্যের বরাত দিয়ে ওই সময় জাতীয় ও স্থানীয় অনেক গণমাধ্যম তাদের অনলাইন ভার্সনে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ঘটনার সত্যতা জানতে দ্রুত তৎপর হয়ে উঠে গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য গণমাধ্যম। পরে প্রশাসনিক নির্দেশে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে সেই নারী এনজিও কর্মীর ধর্ষণের আলামত পাননি বলে প্রতিবেদন দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটি মিথ্যা দাবি করে গত ১০ নভেম্বর কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই নারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি ৫০০ ধারায় বিজিবির সুবেদার মোহাম্মদ আলি মোল্লা ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন।
মামলাটি আমলে নেওয়ার পর আদালত সাত দিনের মধ্যে সাক্ষীদের জবানবন্দি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য টেকনাফ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনায় মামলাটি তদন্ত করেন টেকনাফ থানার ওসি (অপারেশন) ইন্সপেক্টর শরিফুল ইসলাম। তিনি ওই বছরের (২০২০) ২২ নভেম্বর রোববার আদালতে প্রতিবেদন জমা দিলে চাঞ্চল্যকর মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেদন দাখিলের পর ওই এনজিও কর্মীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেন আদালত।
মুহিববুল্লাহ মুহিব/ এমআইএইচ/এসপি