কলি ফুটে এখনও বেরোয়নি লাল শিমুল। পলাশের রঙে মেখে যায়নি সবুজ পাতার গাছেরা। পুরোপুরি কাটেনি মাঘের হিম হিম কুয়াশা। প্রকৃতিতে যাই ঘটুক, ফুল ফুটুক কিংবা নাই ফুটুক, তবুও আজ এসেছে বসন্ত।

বসন্ত একা আসেনি, সঙ্গে নিয়ে এসেছে ভালোবাসা। বসন্তের বাসন্তী আর ভালোবাসার লালে ছেঁয়ে গেছে চারদিক। ফুলের দোকানিরা ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন পথে, ঘাটে ও উদ্যানে। প্রেমিক ভালোবেসে পুষ্প মুকুট কিনে পরিয়ে দিচ্ছে প্রেমিকার খোঁপায়, প্রেমিক যুগলের হৃদয়ে ভালোবাসার ঝংকার। চেনা বুলির মতোই যেন সবাই আওরাচ্ছেন ভালোবাসি-ভালোবাসি শব্দটি।

চারদিকে যেন উৎসবের আমেজ। রঙিন পোশাকে সেজেগুজে ঘুরতে বেরিয়েছে তরুণ-তরুণী ছাড়াও বাচ্চা-বুড়ো সবাই। ফাগুনের রঙ আর ভালোবাসার রঙ মিলেমিশে আজ হয়েছে একাকার।

ময়মনসিংহ নগরে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে খানিক চিত্রটা এমনই। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই প্রেমিক যুগলদের দেখা মিলছে নগরীর ব্রহ্মপুত্র নদ ছোঁয়া শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যান অথবা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। এছাড়া বিপিন পার্কসহ নানা জায়গায় রয়েছে তরুণ-তরুণীদের ভিড়।

চড়া দাম সত্ত্বেও ফুলের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেতে দেখা গেছে অনেককেই। তবে ফুল বিক্রির শীর্ষে ছিল গোলাপ ফুল। প্রিয় মানুষকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রকারন্তরে ভালোবাসার কথাই যেন বলছেন সবাই। এভাবেই গড়িয়েছে দুপুর। এবার আহারের পালা। রিকশায় ঘুরে ছুটেছেন হয় ফাস্টফুড নয়তো রেস্টুরেন্টে। নগরীর সারিন্দা, ফুড পার্ক, হিমু আড্ডা, ধানসিঁড়ি, রোম-থ্রি, বেস্ট বাইট, মেনসাসহ বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বেশ ভিড় ছিল তরুণ-তরুণীদের।

আবারো জয়নুল উদ্যানে দুজন-দুজনার হাত ধরে বসেছেন যুগলরা। মনের কথা বলতে বলতে তারা ব্যাকুল। হয়তো হাতে হাত রেখে কানে কানে বলছেন ‘তোমায় ভালোবাসি বেশ’ কিংবা কবিগুরুর ভাষায়, ‘...ভালোবাসি পরাণ ভরি...’।

উবায়দুল হক/এমজেইউ