নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে তেমন মাছ না মিলছে না। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ছোয়াখালীতে বিশেষ দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেন জেলেরা।

জানা যায়, বেশ কিছু দিন ধরে হাতিয়ার মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে মাছ মিলছে না। ফলে জেলেদের মনে হতাশা কাজ করছে। কিস্তিসহ বিভিন্ন ঋণের চিন্তায় পড়েছেন তারা। সেজন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য এবং নদীতে মাছ বৃদ্ধির জন্য খতমে ইউনুস শেষে দোয়া ও তবারকের আয়োজন করেন জেলেরা। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা ফরহাজী ও মাওলানা আব্দুর রহিম। শেষে সকলের মাঝে তবারক বিতরণ করা হয়।

আয়োজক নবির মাঝি ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদী আমাদের একমাত্র আয়ের সম্বল। অন্য কোনো কাজ জানি না। নদীর আয় দিয়ে আমাদের জীবন চলে। যদি মাছ না পাই তাহলে ঋণের মধ্যে পড়তে হবে। তখন পরিবার নিয়ে বাঁচা কঠিন হয়ে পড়বে।

বাবলু মাঝি নামের একজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদীতে মাছের আশায় জাল ফেললেও সারাদিন পর বিকেলে এসে মাত্র দুইটি জাটকা ধরতে পেরেছি। মাছ নেই বললেই চলে। তাই আল্লাহর কাছে সাহায্যের জন্য দোয়া ও মিলাদের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাছের বৃদ্ধির জন্য এমন দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। আগে এই সময়ে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে মাছ না পেয়ে অনেক জেলে পেশা পরিবর্তন করছেন। অনেক জেলে ঋণের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাজু চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেঘনা নদীতে অনেক দিন ধরে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করা হয়। এতে মাছের রেণু ও ডিম নষ্ট হয়। ফলে মাছের সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকে। আমরা জেলেদের বিভিন্নভাবে বুঝাচ্ছি, যদি এসব নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার না কমাতে পারে তাহলে সামনেও তারা মাছ পাবে না।

হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাছ পেলে জেলেরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি দেশের অর্থনীতির চাকাও সচল থাকবে। তাছাড়া বেহুন্দি জাল, কারেন্ট জাল না ব্যবহারের জন্য তাদের বুঝানো হচ্ছে। বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে জেলেদের বকনা বাছুর, ছাগল, সেলাই মেশিন ও ভ্যান দেওয়া হচ্ছে। মূলত জেলেদের কর্মসংস্থানের জন্যই এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

হাসিব আল আমিন/এমজেইউ