মুক্তিযোদ্ধার গেজেট থেকে কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এমএ মতিনের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন উলিপুর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হওয়ায় শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

পরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উলিপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ও উলিুপর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য এমএ মতিনসহ উলিপুর উপজেলার দেলোয়ার হোসেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের নাম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য লজ্জার বিষয়। সংসদ সদস্য এমএ মতিনের বড় ভাই এমএ করিম মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তার নাম মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে রাজাকারের তালিকায় রয়েছে। সংসদ সদস্য এমএ মতিন সেই রাজাকার পরিবারের সদস্য ও ১৯৭৯ সালে গঠিত ৭ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ৭ নং সদস্য ছিলেন। এছাড়াও ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সংসদ সদস্য এমএ মতিনের নামে এমএ মতিন কারিগরি ও কৃষি কলেজের এমপিওভুক্তির জন্য তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব মান্নান ভূঁইয়ার ডিও লেটার ব্যবহার করেন তিনি। ডিও লেটারে মান্নান ভূঁইয়া এমএ মতিনকে বিএনপি পরিবারের সদস্য হিসেবে খালেদা জিয়ার কাছে সুপারিশ করেন। 

সংসদ সদস্য এমএ মতিন ও দেলোয়ার হোসেন দুইবার উলিপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিতে আবেদন করেও নিজেদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণ করতে পারেননি। এক মাস আগে বের হওয়া তালিকায় তাদের দুজনের নাম গেজেটভুক্ত হয়। অবিলম্বে গেজেট থেকে দুজনের নাম প্রত্যাহারের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। 

এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহাজাহান আলী, আব্দুল খালেক সরকার, আব্দুল জলিল সরকার, আব্দুল মজিদ সরকার, শমসের আলীসহ উলিপুর উপজেলার অর্ধশতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন। 

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য এমএ মতিন বলেন, আজ যারা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তারা তো কেউ মুক্তিযোদ্ধা নন। মাত্র তিনজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন সেখানে। তারা তো উলিপুরে সংবাদ সম্মেলন করার সাহস পেল না, কুড়িগ্রাম গেল কেন বোঝেন। আমি তো বিপুল ভোটে নৌকায় আগামীতে বিজয়ী হবো, এজন্য তারা এ কাজ করছে। আজ বিএনপির তিনজন নেতা ছিল সেখানে। বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তারা এসব করছে। আগামী রোববার উলিপুর প্রেসক্লাবে আমার সংবাদ সম্মেলন আছে, সব কিছু জানতে পারবেন সেদিন।

জুয়েল রানা/আরএআর