প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেছেন, এবার সবার লক্ষ্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চার দেশের রাষ্ট্রদূতসহ প্রতিনিধি দল নিয়ে পুরো ভাসানচর পরিদর্শন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

মুখ্য সচি বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে চার দেশের রাষ্ট্রদূতসহ প্রতিনিধি দল কথা বলেছেন। রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে চান। ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্প আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে হয়েছে বলে তারা অভিভূত হয়েছেন। এবার সবার লক্ষ্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। 

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে নতুন পোষাক বিতরণ করেন, বৃক্ষরোপণ এবং পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।  

এ সময় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডার ক্লাউ এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের অফিসার-ইনচার্জ সিমোন পার্চমেন্ট, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. সালাহউদ্দিন, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের একান্ত সচিব মো. কায়ছারুল ইসলাম, পরিচালক-৯ মোহাম্মদ নাজমুল হক, পরিচালক-১৪ ডা. মোহাম্মদ মহিবুল হাসান, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান, নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (রুটিন দায়িত্ব) মো. নাজিমুল হায়দার, পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (রুটিন দায়িত্ব) মো. নাজিমুল হায়দার ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে তিনি জানান, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন এই প্রত্যাবর্তন হবে সম্পন্ন নিরাপদ। ঢাকায় গিয়ে নতুন কর্মপরিকল্পনা করবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে জাপান, চীন, ফ্রান্স ও ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতসহ প্রতিনিধি দল ভাসানচর পৌঁছায়। একই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলও ভাসানচর পৌঁছান। বিকেলে ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে হেলিকপ্টারযোগে তারা ভাসানচর ত্যাগ করেন। একই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলও ভাসানচর ত্যাগ করেন। 

প্রসঙ্গত, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে নৌবাহিনী। বিভিন্ন ধাপে কক্সবাজার থেকে এখানে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে। 

হাসিব আল আমিন/আরকে