চাঁপাইনবাবগঞ্জের বেতবাড়িয়া এলাকায় সুধী সমাবেশ ও বার্ষিক ভোজের আড়ালে গোপন বৈঠক করার অভিযোগে জামায়াত-শিবিরের ২৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক সংসদ সদস্যসহ ৮৮ জনের নামে মামলা করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে সদর মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ওবাইদুল হক বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।

এই মামলায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ ও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতানামা আসামি করা হয়েছে। পরে আজ রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে জামায়াত-শিবিরের ২৫ নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলায় তিনজনকে পলাতক আসামি দেখানো হয়েছে। তারা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াতের নেতা মো. লতিফুর রহমান (৬৮), জেলা জামায়াতের আমির মো. আবুজার গিফারী (৫২) ও জামায়াত নেতা মজিবুর রহমান (৫৫)।

জানা যায়, গতকাল শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া এলাকা থেকে গোপন বৈঠক করার অভিযোগে জামায়াত-শিবির সন্দেহে তাদেরকে আটক করা হয়। জাবালুন নূর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাদরাসার বার্ষিক সভা ও সুধী সমাবেশের আড়ালে নাশকতা করার বিষয়ে গোপন বৈঠক করছিল বলে অভিযোগ পুলিশের।

তবে মাদরাসার অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আলিম মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাবালুন নূর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাদরাসার ৪ জন শিক্ষক, কয়েকজন অভিভাবক ও সুধীজনসহ সব মিলিয়ে অনুষ্ঠান থেকে ২৭ থেকে ৩২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানতে পারছি, পুলিশ বলছে ২০ বা ২৫ জনকে আটক করেছে।

আব্দুল আলিম জামায়াত-শিবিরের গোপন বৈঠকের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এখানে শুধুমাত্র মাদরাসার বার্ষিক সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের মাঝে এসে পুলিশ বাধা দেয়। আমরা দুপুরের পর আর কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারিনি।

এ বিষয়ে সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম আলমগীর জাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে গ্রেপ্তারকৃত জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে শনিবার দুপুরে গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। জাবালুন নূর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাদরাসার প্রধান শাখা বেতবাড়িয়ায় অভিভাবক ও সুধী সমাবেশ, বার্ষিক ভোজ, দাতাদের জন্য দোয়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নাম করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা গোপন বৈঠক করছিল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াতের নেতা মো. লতিফুর রহমান ও জেলা জামায়াতের আমির মো. আবুজার গিফারীকে পলাতক আসামি করার বিষয়ে ওসি আরও জানান, তাদের নেতৃত্বেই এই গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই গোপন বৈঠকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টা থেকে সুধী সমাবেশ ও বার্ষিক ভোজের আড়ালে জামায়াত-শিবিরের গোপন বৈঠক চলাকালীন সময়ে পুরো এলাকা ঘিরে রাখে পুলিশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রওশন আলী, সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম আলমগীর জাহান।

মো. জাহাঙ্গীর আলম/এমজেইউ