লাগামহীন পাগলা ঘোড়ার মতো ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে নিত্যপণ্যের বাজার। সব মিলিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতি। দামের চাপে মধ্যবিত্তরা হিমশিম খাচ্ছেন। অন্যদিকে নিম্নবিত্তদের অবস্থা অবর্ণনীয়। এমন অবস্থায় যাদের শাকসবজি কেনার সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগের মাধ্যমে শাকসবজি সংগ্রহ করছে কুড়িগ্রামের ‘আমার অল্প আয়ে সবার খাবার’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

সরেজমিনে কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জ বাজারে দেখা গেছে, প্রতিটি সবজির দোকানে একটি করে ঝুড়ি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে ‘গরিবকে অবহেলা করবেন না। ধনী হতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। গরিব হতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না।’ বাজারের সবজি ক্রেতারাও তাদের সাধ্যমতো ঝুড়িতে সব ধরনের সবজি রাখছেন। পরে এসব সবজি একত্রিত করে প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে অতিদরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করছে সংগঠনটি।

খলিলগঞ্জ বাজারের সবজি বিক্রেতা মামুন মিয়া বলেন, আমাদের এখানকার কয়েকজন ছেলে একটা সংগঠন করেছে। যেসব মানুষ বাজারে সবজি কিনতে পারে না তাদের জন্য প্রতিটি দোকানে ঝুড়ি রেখেছেন। ক্রেতারাও তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শাকসবজি রেখে দেন।

রকেট নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ঝুড়ির পাশাপাশি এখানে লেখা আছে গরিব মানুষকে সাহায্য করুন। আমরাও ক্রেতাদের অসহায় মানুষদের জন্য ঝুড়িতে রেখে যেতে বলি। সবাই সবার সামর্থ্য মতো দান করেন।

সদরের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের চেড়েঙ্গা এলাকার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খোকা (৬০) বলেন, নিত্যপণ্যের যে দাম আমরা বাজার করতে পারি না। আমি প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে এসে এখান থেকে সব ধরনের সবজি নিয়ে যাই। এগুলো না পেলে কপালে সবজি জুটতো না। আমাদের জন্য যারা এ ব্যবস্থা করেছেন আল্লাহ তাদের ভালো করুক।

‘আমার অল্প আয়ে সবার খাবার’ সংগঠনটির উদ্যোক্তা মো. সোহেল রানা বলেন, অতিদরিদ্র মানুষের জন্য আমরা কাজ করছি। যারা বাজারে সবজি কিনতে পারেন না তাদের জন্য প্রতিদিন সবজির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা প্রতিটি দোকানে একটি করে ঝুড়ি ঝুলিয়ে রাখছি। দশের লাঠি একের বোঝা। তবে আমরা কাউকে জোর করি না। যার যেমন সামর্থ সেই হিসেবে অসহায় মানুষের জন্য দান করেন। আল্লাহ তাদের ভালো করবেন। দোয়া করবেন আমরা যেন সফল হতে পারি।

মো. জুয়েল রানা/এমজেইউ