কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পাশে যেখানে-সেখানে ফেলা হয় খাবার হোটেলগুলোর বর্জ্য। দীর্ঘদিন ধরে খাবার হোটেলের পচাবাসি খাবার ও সব ধরনের বর্জ্য এক সঙ্গে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে দুর্গন্ধে অতিষ্ট পর্যটক, ব্যবসায়ী ও স্থানীরা।

এতে সাগর কন্যা খ্যাত সম্ভবনাময় এই পর্যটন কেন্দ্রটির পরিবেশ মারাত্মক বিপর্যের মুখে পড়েছে। দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাভুক্ত ৪৮নং পোল্ডারের বেড়িবাধ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য গত ১২ নভেম্বর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। অপসারণ করা হয় সরকারি জমিতে অবৈধভাবে দখলে থাকা দোকানপাট ও বসত বাড়ি। বেড়িবাধ লাগোয়া এসব ফাঁকা জায়গায় কুয়াকাটার কয়েকটি হোটেল বর্জ্য ফেলছে। হোটেলের এসব বর্জ্য পচে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে মারাত্মক বিপর্যের মুখে পড়েছে সেখানকার পরিবেশ।

ভোগান্তিতে পড়েছে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা দূর-দূরান্তের ভ্রমণপিপাসু পর্যটকসহ স্থানীয়রা। জিরো পয়েন্ট থেকে সৈকতে নামার রাস্তার দুই পাশের চায়ের দোকানেও বসতে পারছেন না পর্যটকেরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন আগত পর্যটকরা।

সিরাজগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক আল-মামুন বলেন, ‘এখানে বসে চা পান করার মতো কোনো অবস্থা নেই। দুর্গন্ধে দাঁড়ানোই তো যাচ্ছে না। খাবার হোটেলগুলো যে পরিবেশে রান্না করে তা আগে দেখলে এখানে খাবার খেতাম না।’

আরেক পর্যটক বাকা বিল্লাহ বলেন, ‘এখানে খাবার হোটেলগুলো এতো নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি করে দেখে আমি হতভাগ হয়েছি। এই খাবার হোটেলগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চা বিক্রেতা বলেন, দুর্গন্ধে এখানে বসা যায় না। খুব কষ্ট করে ব্যবসা করি। পর্যটকেরা আমাদের গালি দেয়। দুর্গন্ধের জন্য বসতে চায় না। এরা প্রভাবশালী আমরা কিছু করতেও পারি না।

চৌরাস্তার পাশে বর্জ্য ফেলা এবং নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে গাজী রেস্তোরার মালিক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা পাশে একটি গর্ত করে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা নেব।’

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টর মিনাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘আমরা অল্প কয়েক দিন আগেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি এবং যত্রতত্র ময়লা ফেলার কারণে মোবাইল কোট পরিচালনা করে বৈশাখী রেস্তোরাঁ ও গাজী রেস্তোরাকে জরিমানা করেছি। যদি আবারও এরকম অভিযোগ পাই প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘কুয়াকাটা পৌর সভা থেকে হোটেল বৈশাখী রেস্তোরা ও গাজী রেস্তোরাকে একাধিক বার সতর্ক করা হয়েছে। তারা আমাদের নির্দেশনা মানছে না। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। 

হাফিজুর রহমান আকাশ/আরকে